Monday, 11 December 2023

Ramkrishna mission


 


আজ ৯ই ডিসেম্বর, আজই সেই দিন। বড় পবিত্রতম আমাদের কাছে। 


একশ পঁচিশ বছর আগের কথা। স্বামীজী বেলুড়ে ফিরে এসেছেন কাশ্মীর থেকে। ততদিনে মঠের নতুন দ্বিতল বাড়ি নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। গুরুভাইদের ডেকে বললেন, এবারে নীলাম্বরবাবুর বাগানবাড়ি থেকে নূতন বাড়িতে মঠ স্থানান্তরিত করতে হবে। পূর্ণোদ্যমে শুরু হয়ে গেল ব্যবস্থাপনা।


১৮৯৮ সাল। এদিন ভোরে গঙ্গাস্নান সেরে স্বামীজী প্রবেশ করলেন ঠাকুরঘরে। অনন্তর পূজকের আসনে বসে পুষ্পপাত্রে যতগুলি ফুল-বেলপাতা ছিল, একত্রে দুহাতে তুলে প্রভুর শ্রীপাদপদ্মে অঞ্জলি প্রদান করলেন। তারপর একেবারে ধ‍্যানস্থ। এইভাবে বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হয়ে গেল। ঠাকুরঘরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে গুরুভ্রাতা, সন্ন‍্যাসীবৃন্দ ও অন‍্যান‍্য ভক্ত-শিষ‍্যরা স্বাক্ষী থাকলেন এই অপূর্ব দর্শনের। 


এবারে বাগানবাড়ি থেকে উত্তরাভিমুখে শুরু হল ছোট একটি শোভাযাত্রা। সামনে স্বামীজী স্বয়ং। ডান কাঁধে ধরে রেখেছেন ঠাকুরের পূতাস্থি পূর্ণ তাম্রপাত্রটি----'আত্মারামের কৌটা'। গঙ্গার তীরে ঘন ঘন শঙ্খধ্বনি ও ঠাকুরের নামে জয়ধ্বনিতে মনে হল পার্শবর্তী জাহ্নবীও যেন নৃত‍্যে মেতেছে। 


যেতে যেতে স্বামীজী শিষ‍্যকে বললেন,"ঠাকুর আমায় বলেছিলেন, 'তুই কাঁধে করে আমায় যেখানে নিয়ে যাবি, আমি সেখানেই যাব ও থাকব, তা গাছতলাই কি, আর কুটিরই কি!' সেজন‍্যেই আমি স্বয়ং তাঁকে কাঁধে করে নতুন মঠভূমিতে নিয়ে যাচ্ছি। নিশ্চই জানবি, বহুকাল পর্যন্ত 'বহুজনহিতায়' ঠাকুর ঐ স্থানে স্থির হয়ে থাকবেন।" 


নূতন দালানের ঠাকুরঘরে এসে স্বামীজী কাঁধ থেকে আত্মারামের কৌটাটিকে নামিয়ে নির্দিষ্ট আসনে স্থাপন করলেন। অতঃপর ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণামপূর্বক শুরু হল ঠাকুরের পূজা। পূজান্তে প্রজ্বলিত যজ্ঞাগ্নিতে হোম করলেন। পরে সন্ন‍্যাসীদের সহযোগিতায় পায়েসান্ন তৈরী করে ঠাকুরকে ভোগ নিবেদিত হল। সকলের উদ্দেশ‍্যে স্বামীজী বললেন,"আপনারা আজ কায়মনবাক‍্যে ঠাকুরের পাদপদ্মে প্রার্থনা করুন যেন মহাযুগাবতার ঠাকুর আজ থেকে বহুকাল 'বহুজনহিতায় বহুজনসুখায়' এই পুণ‍্যক্ষেত্রে অবস্থান করে একে সর্বধর্মের অপূর্ব সমন্বয়কেন্দ্র করে রাখেন।" সকলে করজোড়ে প্রার্থনা করতে লাগলেন।


স্বামীজী বিশ্বজয় করে ফেরার সময় শ্রীশ্রীঠাকুরের পোর্সিলিনের পট তৈরী করিয়ে এনেছিলেন। আর নিরঞ্জন মহারাজ তৈরী করিয়ে রেখেছিলেন একটি সিংহাসন। পোর্সিলিনের পটে সেই আসনে বসিয়ে ঠাকুরের পূজা হল। ১৯৩৮ সালে নূতন মন্দিরে ঠাকুরের মূর্তি প্রতিষ্ঠার পরে পট সহ আসনটি নিয়ে যাওয়া হয় গর্ভমন্দিরের দোতলায়, ঠাকুরের শয়নকক্ষে। 


বেলুড় মঠে স্বামীজীর ঘরের উত্তর পশ্চিমে দ্বিতল ভবনের সেই আদি মন্দিরটি একশত পঁচিশ বছরের স্মৃতিতে আজও পূর্ণমহিমায় সুবাসিত। ঠাকুরের আসনে শোভা পায় একটি তৈলচিত্র। অনেকেই বলেন 'পুরানো মন্দির'। তাতে কি! শ্রীশ্রীঠাকুর যে বলেছেন, তিনি এখানেই থাকবেন! শতকোটি প্রণাম নিও ঠাকুর।


জয় ঠাকুর জয় মা জয় স্বামীজী জয় গুরুদেব।


✍️ ©️ শুভেন্দু চক্রবর্তী।

#collected

Tuesday, 5 December 2023

চিড়িয়াখানায় ভাবস্থ শ্রীরামকৃষ্ণ

 




*চিড়িয়াখানায় মা দুর্গার বাহন দেখে সমাধিস্থ হয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ* ।


তিনি ভগবানের দেখা পেয়েছিলেন। নিজ স্ত্রীর মধ্যে দেখেছিলেন ঈশ্বরীর রূপ। সেই রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব যখন আলিপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে সিংহ দর্শন করেছিলেন তখন তাঁর এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ১৫০ বছরের চিড়িয়াখানা ইতিহাসে সেই কাহিনি আজও ঘুরে বেড়ায়।


দেবী দুর্গার বাহন সিংহ। তাকে চাক্ষুষ দেখে তিনি মোহিত হয়ে পড়েছিলেন। খুব কম জনই জানেন সেই কথা। চিড়িয়াখানায় তাঁর আগমনের স্মৃতিফলক মনে করায় সেই ‘অমৃত’ কথা।


এশিয়ার অন্যতম বড় এই চিড়িয়াখানা কখনও বাঘ সিংহের ক্রসবিড, কখনও মার্মোসেট চুরি, শিবা নামক বাঘের নর ভক্ষণ সহ নানাবিধ ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। প্রাচীনতম গজ কচ্ছপও ঘুরে ফিরে বেড়াত৷ এসবই হালফিলের ঘটনা৷


কিন্তু ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের চিড়িয়াখানা দর্শনের কথা তো তেমন উঠে আসেনি৷ মহানগরের গর্বের স্থান দর্শন করে গিয়েছেন বহু বিখ্যাত মানুষ। তাঁদের অন্যতম রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব। নতুন করে সেজে ওঠা চিড়িয়াখানায় বসানো ফলকে ধরা আছে সেই কথা৷ সেখান থেকে জানা যায়, ঠাকুরের পদধূলি চিড়িয়াখানায় পড়েছিল ১৮৮৪ সালে। তখন চিড়িয়াখানার বয়স প্রায় ১০ বছর৷ ২৪ ফেব্রুয়ারির এক শীত শেষের সকালে তিনি এসে হাজির হয়েছিলেন আলিপুর চিড়িয়াখানায়।


কথামৃতে সেই দিনের কাহিনি বর্ণিত রয়েছে। সেখান থেকে জানা যায়, দক্ষিণেশ্বরে এসে তিনি শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয়কে শহরের নতুন আকর্ষণের স্থল চিড়িয়াখানা দর্শনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ঠাকুরের কথা ফেলতে পারেননি শাস্ত্রী মহাশয়। এদিকে তাঁর একটি জরুরি কাজও ছিল। অনেক ভাবনাচিন্তার পর তিনি স্থির করেন পরমহংসদেবকে তাঁর গাড়ি করে কিছুটা পথ এগিয়ে দেবেন। এরপরের দায়িত্ব শিষ্য নরেনের৷

কথামৃতের উল্লেখ থেকে জানা যায়, ওইদিন সুকিয়া স্ট্রীট অবধি শ্রীরামকৃষ্ণকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শিবনাথ শাস্ত্রী। এরপরে তাঁকে ওই গাড়ি করেই আলিপুরের চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসেন নরেন।

এ তো গেল আসার গল্প৷ ভিতরে কী ঘটেছিল ? জানা যায় চিড়িয়াখানা ঢুকেই রামকৃষ্ণ দেবী দুর্গার বাহন সিংহকে চোখের সামনে দেখে মোহিত হয়েছিলেন। সোনালী কেশরের পশুরাজকে দেখে ‘সিংহ জগজ্জননীর দেবী দুর্গার বাহন’, এই কথা বারবার আওড়াতে থাকেন। এরপর দেখতে থাকেন শুধু সিংহটিকেই। সেদিন তিনি আর কোনও পশু দেখেন নি। দেবীর বাহনকে দেখেই তাঁর মন ভরে গিয়েছিল।

চিড়িয়াখানা দর্শনের কথা শুনিয়েছিলেন ঘনিষ্ঠদের। শ্রীম  রচিত কথামৃত থেকে জানা যায় তিনি বলেছিলেন, “চিড়িয়াখানা দেখতে লয়ে গিছলো। সিংহ দর্শন করেই আমি সমাধিস্থ হয়ে গেলাম। ঈশ্বরীর বাহনকে দেখে ঈশ্বরীর উদ্দীপন হল-তখন আর অন্য জানোয়ার কে দেখে। সিংহ দেখেই ফিরে এলাম।”বাকিটা ইতিহাস।


সূত্রঃ উদ্বোধন।

জয় ঠাকুর মা স্বামীজী মহারাজ 🙏🏻🌻🌺🏵️

মানসপুত্র নেতাজী

 🌿 মানসপুত্র নেতাজী 🍁 🌻১৯০২ সালের জানুয়ারীতে সুভাষচন্দ্রের পিতা তাঁকে কটকের মিশনারী স্কুলে ভর্তি করে দিলেন, পুত্রের প্রাথমিক বিদ্যা লাভে...