Wednesday 14 October 2020

 

মা এবং ঠাকুরের দুটি বিশেষ ঘটনা

দক্ষিনেশ্বরে একদিন সন্ধ্যার পর শ্রীমা শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে খাবার রাখতে গিয়েছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ তখন খাটের উপর চোখ বুজে শুয়েছিলেন। লক্ষীদি খাবার খাবার রেখে গেল মনে করে তিনি বললেন, " দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে যাস।"  মা বললেন, "হ্যাঁ", বন্ধ কল্লুম"। মার গলা বুঝতে পেরে শ্রীরামকৃষ্ণ সংকুচিত হয়ে উঠলেন : " আহা তুমি?" আমি ভেবেছিলুম লক্ষী, কিছু মনে করোনি।" " দিয়ে যেয়ো" না বলে ভুল করে "দিয়ে যাস" বলে ফেলে তিনি যেন কত অপরাধ করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, সারা রাত তিনি ঘুমোতে পারলেন না। সকালবেলা নহবতে শ্রীমায়ের কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন, "দেখ গো, সারারাত আমার ঘুম হয়নি ― ভেবে ভেবে , কেন এমন রুক্ষ কথা বলে ফেল্লুম!"
          শ্রীমা –কে শ্রীরামকৃষ্ণ এমনি মর্যাদা দিতেন সবসময়। সেই জন্য পরবর্তীকালে মা বলতেন : "আমি এমন স্বামীর কাছে পড়েছিলাম যে, তিনি কখনো আমাকে "তুই" পর্যন্ত বলেননি।" "ঠাকুর আমাকে কখনো  ফুলটি দিয়েও ঘা দেননি।"

                            **********

শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে ভক্তেরা যেসব ফলমূল দিত, তিনি সেসব নহবতে শ্রিমায়ের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। মা আনন্দে সেসব সবাইকে খাইয়ে দিতেন। তিনি বরাবরই এব্যাপারে মুক্তহস্ত ছিলেন। একদিন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণই তাঁকে অনুযোগ করলেন, "এত খরচ করলে কি করে চলবে?" শ্রীমা কোনো প্রতিবাদ করলেন না, চুপ করে চলে এলেন। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ বুঝলেন যে, মা কষ্ট পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ভ্রাতুষ্পুত্র রামলালকে বললেন : "ওরে রামলাল , যা তোর খুড়িকে গিয়ে শান্ত কর । ও রাগ করলে (নিজেকে দেখিয়ে) এর সব নষ্ট হয়ে যাবে"। ঘটনাটি উল্লেখ করে নিবেদিত মন্তব্য করেছেন : " শ্রীমা এমনি প্রিয় ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে"। প্রিয় এবং সম্মানের।

Book Name:- 'আমি মা, সকলের মা।'
প্রকাশক ও সম্পাদক:-  স্বামী প্রভানন্দ।

জয় মা সারদা।
জয় ঠাকুর মা স্বামীজী।
🙏🌺🌿💥🌺🙏🌿💥🌺🌿💥🌺🙏🌿💥🌺🌿💥🙏🌻🌻🌺🌺🌻🌻🌺

স্বামীজীর হিমালয়ের পথে যাত্রার সময় এক ঘটনা::-


স্বামীজীকে একবার একজন বলেছিলেন :: সন্ন্যাসীর পক্ষে নিজের দেশের মায়া ত্যাগ করে সব দেশকে একই রকম দৃষ্টিতে দেখা উচিত। স্বামীজী উত্তর দিয়েছিলেন ::"" যে আপনার মাকে ভাত দেয় না, সে অন্যের মাকে কি পুষবে?"" অর্থাৎ সন্ন্যাসীরও উচিত মাতৃভূমিকে ভালোবাসা । নিজের দেশকেই যে ভালোবাসতে পারে না , সে গোটা পৃথিবীকে আপন করে নেবে কি করে? প্রথমে স্বদেশপ্রেম , স্বদেশপ্রেমের সিঁড়ি বেয়ে বিস্বপ্রেম।

              হিমালয়ের চড়াই- উতরাই  বেয়ে চলেছেন স্বামীজী। এক চড়াইয়ের সামনে স্বামীজী দেখলেন, একটি বৃদ্ধ ক্লান্ত অবসন্ন হতাশ ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। স্বামীজীকে দেখে বৃদ্ধা বললেন :"" মহারাজ , এত পথ যাবো কি করে? আমি তো আর চলতেই পারছি না― আমার চাটি ফেটে যাবে।""

স্বামীজী তাঁকে বললেন : ""নিজের পায়ের দিকে তাকান তো। পেছনে আপনার পায়ের তলায় যে পথ পড়ে আছে, আপনি তা মাড়িয়ে এসেছেন, আর সামনে যে পথ দেখছেন, তাও তো সেই একই পথ― ও পথটুকুও শিগগিরই আপনি পা দিয়ে মাড়িয়ে যাবেন।"" স্বামীজীর কথায় বৃদ্ধের নৈরাশ্য কেটে গেল― তিনি আবার পথ চলতে লাগলেন।


Book Name :- সবার স্বামীজী।

প্রকাশক :- স্বামী সর্বভূতানন্দ ও স্বামী লোকেশ্বরানন্দ


জয়তু স্বামীজী বিবেকানন্দ

জয় ঠাকুর মা স্বামীজী

🏵️🌿🌺💥🏵️🌺🌿💥🏵️🌿🌺💥🏵️🌿🌺💥🌻🌺💥🌻🌺💥🌿💥🌿💥🌻🌺💥🌻🌿💥

 শ্রীমা এবং রাধুর একটি ঘটনা:-


শ্রীরামকৃষ্ণের এবং স্বামী বিবেকানন্দেরও দেহত্যাগের পরের ঘটনা। দক্ষিণাত্যে ঘুরতে ঘুরতে মা তাঁর ভাইঝি রাধু ও অন্যান্যদের নিয়ে এসেছেন পামবান দ্বীপে রামেশ্বর শিব মন্দির দেখতে। ওই দ্বীপ ও মন্দির তখন রামনাদের রাজার অধীনে― যিনি ছিলেন স্বামীজীর শিষ্য । তিনি মন্দিরে কর্মচারীদের বলে পাঠিয়েছিলেন " আমার গুরুর গুরু পরম গুরু যাচ্ছেন― সব ব্যবস্থা করবে।" তাদের বিশেষ ব্যবস্থা অনুযায়ী মা গর্ভমন্দিরে গিয়ে মনের সাধে রামেশ্বর শিবলিঙ্গকে পুজো করলেন। তারপর রাজার ইচ্ছা - অনুযায়ীই একদিন তাঁরা মাকে মন্দির-সংলগ্ন কোষাগারটি ঘুরিয়ে দেখালেন। রাজার নির্দেশ ছিল: মা বা তাঁর সঙ্গীরা যদি কোষাগার থেকে কিছু নিতে চান সঙ্গে সঙ্গে যেন তা দেওয়া হয়। মা-কে তাঁরা সেকথা বললে মা বললেন : "আমার আর কি প্রয়োজন?" পরে, পাছে তাঁরা মনক্ষুন্ন হন এই ভেবে বললেন :" আচ্ছা , রাধুর যদি কিছু দরকার হয়, নেবে এখন।' রাধুকে বললেন, " দেখ, তোর যদি কিছু দরকার হয়, নিতে পারিস।" কিন্তু কোষাগার খুলতেই যখন হিরা-জহরতের সব জিনিস ঝকমক করে উঠলো, তখন মায়ের বুক দুরদুর করে উঠলো,শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে তিনি আকুল মনে প্রার্থনা করতে লাগলেন , " ঠাকুর, রাধুর যেন কোন বাসনা না জাগে।" ঠাকুর সে প্রার্থনা নিশ্চয়ই শুনলেন; কারণ বালিকা রাধু সব দেখেশুনে বললো : "এ আবার কি নেব?" ওসব আমার চাই না। আমার লেখবার পেন্সিলটা হারিয়ে ফেলেছি, একটা পেন্সিল কিনে দাও।' মা নিশ্চিন্ত হলেন এবং রাস্তার একটা দোকান থেকে রাধুকে দু-পয়সার একটা পেন্সিল কিনে দিলেন।

       শ্রীরামকৃষ্ণকে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন : ত্যাগ-সম্রাট। শ্রীমা সর্বক্ষেত্রে , ত্যাগের ক্ষেত্রেও তার উপযুক্ত সহধর্মিনী ― ত্যাগসম্রাজ্ঞী। 



*(সংগৃহীত)*


🙏🏵️🌻🌺জয় ঠাকুর মা স্বামীজী🌺🏵️🌻🙏

মানসপুত্র নেতাজী

 🌿 মানসপুত্র নেতাজী 🍁 🌻১৯০২ সালের জানুয়ারীতে সুভাষচন্দ্রের পিতা তাঁকে কটকের মিশনারী স্কুলে ভর্তি করে দিলেন, পুত্রের প্রাথমিক বিদ্যা লাভে...