মা এবং ঠাকুরের দুটি বিশেষ ঘটনা
দক্ষিনেশ্বরে একদিন সন্ধ্যার পর শ্রীমা শ্রীরামকৃষ্ণের ঘরে খাবার রাখতে গিয়েছেন। শ্রীরামকৃষ্ণ তখন খাটের উপর চোখ বুজে শুয়েছিলেন। লক্ষীদি খাবার খাবার রেখে গেল মনে করে তিনি বললেন, " দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে যাস।" মা বললেন, "হ্যাঁ", বন্ধ কল্লুম"। মার গলা বুঝতে পেরে শ্রীরামকৃষ্ণ সংকুচিত হয়ে উঠলেন : " আহা তুমি?" আমি ভেবেছিলুম লক্ষী, কিছু মনে করোনি।" " দিয়ে যেয়ো" না বলে ভুল করে "দিয়ে যাস" বলে ফেলে তিনি যেন কত অপরাধ করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, সারা রাত তিনি ঘুমোতে পারলেন না। সকালবেলা নহবতে শ্রীমায়ের কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন, "দেখ গো, সারারাত আমার ঘুম হয়নি ― ভেবে ভেবে , কেন এমন রুক্ষ কথা বলে ফেল্লুম!"
শ্রীমা –কে শ্রীরামকৃষ্ণ এমনি মর্যাদা দিতেন সবসময়। সেই জন্য পরবর্তীকালে মা বলতেন : "আমি এমন স্বামীর কাছে পড়েছিলাম যে, তিনি কখনো আমাকে "তুই" পর্যন্ত বলেননি।" "ঠাকুর আমাকে কখনো ফুলটি দিয়েও ঘা দেননি।"
**********
শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে ভক্তেরা যেসব ফলমূল দিত, তিনি সেসব নহবতে শ্রিমায়ের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। মা আনন্দে সেসব সবাইকে খাইয়ে দিতেন। তিনি বরাবরই এব্যাপারে মুক্তহস্ত ছিলেন। একদিন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণই তাঁকে অনুযোগ করলেন, "এত খরচ করলে কি করে চলবে?" শ্রীমা কোনো প্রতিবাদ করলেন না, চুপ করে চলে এলেন। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণ বুঝলেন যে, মা কষ্ট পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ভ্রাতুষ্পুত্র রামলালকে বললেন : "ওরে রামলাল , যা তোর খুড়িকে গিয়ে শান্ত কর । ও রাগ করলে (নিজেকে দেখিয়ে) এর সব নষ্ট হয়ে যাবে"। ঘটনাটি উল্লেখ করে নিবেদিত মন্তব্য করেছেন : " শ্রীমা এমনি প্রিয় ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে"। প্রিয় এবং সম্মানের।
Book Name:- 'আমি মা, সকলের মা।'
প্রকাশক ও সম্পাদক:- স্বামী প্রভানন্দ।
জয় মা সারদা।
জয় ঠাকুর মা স্বামীজী।
🙏🌺🌿💥🌺🙏🌿💥🌺🌿💥🌺🙏🌿💥🌺🌿💥🙏🌻🌻🌺🌺🌻🌻🌺