Tuesday 25 July 2023


 


স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু!


স্বামীজী লিখেছেন, প্রত্যেক জীব শক্তি প্রকাশের এক – একটি কেন্দ্র। পূর্বের কর্মফলে সে শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে, আমরা তাই নিয়ে জন্মেছি।


প্রণম‍্য গবেষক শঙ্করীপ্রসাদ ‌বসু তাঁর সুভাষচন্দ্র বিষয়ক গবেষণাগ্রন্থে বলেছেন — তিনি সেই ক্ষণজন্মা পুরুষ, যিনি প্রথম জীবনে মোক্ষমার্গের অনুসারী পরে ‌তাকে ত‍্যাগ করে পরিণত যৌবন থেকে — ভারতীয় ইতিহাসে ধর্মমার্গী মহাবীর অর্জুনের ভূমিকা নিয়েছিলেন।

তাঁর কাছে ভারতের ধর্মক্ষেত্র – কুরুক্ষেত্রে কৃষ্ণের ভূমিকা নিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ।


স্বামীজীর ত্যাগের মন্ত্রে সুভাষের জীবন উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল যুবা বয়সেই।


কলেজে পড়তে পড়তেই মনে তোলপাড় আকুতি — আর নয়, এবার বেরিয়ে পড়তে হবে গুরুর সন্ধানে — তাঁর বয়স তখন ১৭ বছর। তখন একটা অভাবিত ঘটনা ঘটে তাঁর জীবনে।


দূর সম্পর্কের ‌এক ‌আত্মীয় যুবক এসেছিলেন কটকে। সুভাষ একদিন গেলেন তাঁর কাছে।

যুবকটি ছিলেন ‌স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত। তাঁর টেবিলে রাখা ছিল বিবেকানন্দের লেখা অনেকগুলি বই। সুভাষ বইগুলি ‌পড়তে ‌শুরু করলেন — এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল ‌তাঁর সামনে।


ধর্মে ধর্মে কোনও ভেদ নেই;

দয়া নয় সেবা, ত‍্যাগ, ব্রহ্মচর্য।


দরিদ্র অবহেলিত মানুষের সেবাই যে পরম কর্তব‍্য, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ রইল না তাঁর।


সন্ন‍্যাসী হওয়ার বাসনা — প্রবল হয়ে উঠল তাঁর মনে। কিন্তু সন্ন্যাসী হতে গেলে প্রয়োজন একজন সদগুরুর।


তিনি শুনেছিলেন উত্তর-পশ্চিম ভারতে এমন সন্ন্যাসী আছেন, যাঁরা প্রকৃত পথের সন্ধান দিতে পারেন।


তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন, দু লাইনের লেখা একটি পোষ্টকার্ডে চিঠি দিয়ে।


উত্তর ভারতের সব কটি তীর্থ তিনি ঘুরলেন, সঙ্গে দু-জন বন্ধু ছিলেন। শুরু হল পরিব্রাজক সুভাষ চন্দ্রের হিমালয় যাত্রা। এ যেন স্বামী বিবেকানন্দের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই পরিব্রাজক বেশে আর ‌একজন ভারত পথিকের তীর্থ যাত্রা।


লছমনঝোলা, হৃষিকেশ, হরিদ্বার, গয়া, মথুরা, বৃন্দাবন অনেক ‌তীর্থে ঘুরলেন। বৃন্দাবন হয়ে সুভাষচন্দ্রেরা এলেন বারাণসীতে।


সেখানে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের দুটি ‌শাখাকেন্দ্র পাশাপাশি অবস্থান করছে।


রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রথম সভাপতি ছিলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দ, যিনি শ্রীরামকৃষ্ণের প্রিয় রাখাল নামে পরিচিত, যাঁকে স্বামী বিবেকানন্দ ‘রাজা’ বলে ডাকতেন।


সুভাষচন্দ্র লিখেছেন, “বারানসীতে স্বামী ব্রহ্মানন্দ আমাদের সাদর অভ্যর্থনা জানালেন, তিনি আমার বাবা ও ‌পরিবারের অনেককেই চিনতেন। এখানে আমরা কয়েকদিন রইলাম।”


সেই সময়ে ‌‌একদিন নিজের মনোগত বাসনা প্রকাশ করে সুভাষ, স্বামী ব্রহ্মানন্দের কাছে সন্ন্যাস প্রার্থনা করেন।


সুভাষের প্রার্থনা শুনে  স্বামী ব্রহ্মানন্দ সেই তরুণের তেজোদৃপ্ত মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে সম্ভবত অনাগত ভবিষ্যতের এক মহানায়কের আবির্ভাব লগ্নকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন।


এই ঘটনার অল্পদিন পরে, সুভাষচন্দ্রের দেশ সেবা তথা রাজনীতির প্রভাব দেখা যায়।


স্বামী ব্রহ্মানন্দের দর্শনে সুভাষচন্দ্র অপার শান্তি পেয়েছিলেন। তাঁর তৃষিত বুকে শান্তিবারিধারা নেমে এসেছিল।


বন্ধু দিলীপকুমার রায়ের দুহাত চেপে ধরে বললেন, “ঐ রাখাল মহারাজই আমাকে কাশী থেকে ফিরিয়ে পাঠান, বলেন, আমাকে দেশের কাজ করতে হবে।”


সন্ন্যাসজীবন নয়, অন্তরে বৈরাগী থেকে দেশের কাছে তাঁকে আত্মোৎসর্গ করতে হবে — এই ছিল সুভাষের প্রতি স্বামী ব্রহ্মানন্দের উপদেশ।


সুভাষচন্দ্রের অগ্রজ সুরেশচন্দ্র বসু স্বামী শঙ্করানন্দের মুখে শুনেছেন,

“একদিন বারাণসীর মিশন বাড়িতে স্বামী ব্রহ্মানন্দ যখন বসেছিলেন, তখন মহারাজ দেখতে পান একটি ছেলে এসে ঢুকলো। মহারাজ বললেন, জানকীবাবুর ছেলে মনে হচ্ছে। যদি তাই হয়, তবে ছেলেটির যেন যথাযথ দেখাশোনা করা হয়।


বিকেলবেলা মহারাজের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলে — তিনি তাঁকে গৃহে ফিরে যাওয়ার উপদেশ দেন এবং বলেন, — তাঁকে তাঁদের মত সন্ন্যাস নিতে হবে না। দেশ তাঁর কাছে প্রভূত জিনিস প্রত্যাশা করছে।”


স্বামীজীর বাণী তাঁর অন্তরে অগ্নির স্ফুলিঙ্গের মত সঞ্চার করেছিল প্রেরণা আর উদ্দীপনা।


স্বামী ব্রহ্মানন্দের অধ্যাত্মশক্তির কৃপা মনকে দিল শক্তি, ধ্যানসজ্জাত স্থিরলক্ষে অবিচলতা আর বৈরাগ্যের আদর্শ।


রাজা মহারাজের (স্বামী ব্রহ্মানন্দ) যিনি বালক সুভাষচন্দ্রকে স্বদেশ সেবার পথনির্দেশ দিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ হতে বিরত করেন ও অমোঘ আশীর্বাদে জীবন ভূষিত ও ধন্য করেন। সেই মহাপুরুষের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সুভাষচন্দ্র পরবর্তীকালে ভাববিহ্বল হয়ে বলেন যে যিনি আশীর্বাদ পেয়েছেন, তিনিই জানেন তাঁর যথার্থ। স্বদেশের মুক্তিকল্পে তাঁর যে সুদীর্ঘ পথপরিক্রমণ, ব্রহ্মানন্দ আশীষই তাঁর ছিল সর্বোচ্চ দিঙনির্দেশক।


অন্তরে যেন অনুরণিত হল, “কে তুমি বাজালে নবীন রাগেতে ভারতের প্রাণবীণা।”


স্বামী বিবেকানন্দেরই এক গুরুভাইয়ের নির্দেশে, সন্ন‍্যাস গ্রহণের সঙ্কল্প ত‍্যাগ করে ঘরে ফিরে এলেন —– সুভাষচন্দ্র।


সুভাষচন্দ্রের আজীবন এই আধ্যাত্মিক পিপাসাই তাঁকে স্বদেশমুক্তির বিশেষ কর্মযজ্ঞে প্রণোদিত করে ও বিবেকানন্দ-ব্রহ্মানন্দ নির্দেশিত পথে স্বীয় লক্ষের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হতে অনুপ্রাণিত করে।


এও এক অদ্ভুত যোগাযোগ! গতকাল ছিল ২৩শে জানুয়ারি... একজনের আবির্ভাব তিথি আর একজনের জন্মদিন। দুই মহামানবকে জানাই অন্তরের শ্রদ্ধা ও প্রণাম।🙏🙏🙏💐🏵🌸🌼


 

🕉 ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেব 🕉


একদিন নরেন্দ্রনাথ তাঁর গুরুভাইদের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরছেন৷ 

    কথা উঠল ঠাকুরের সম্বন্ধে কার কি ধারণা? কেউ বলছে—অপূর্ব জ্ঞান, কেউ বলছে—অসাধারণ ভক্তি৷ 

এরকম নানা জনের নানারকম মন্তব্য হচ্ছে৷ নরেন্দ্রনাথ চুপ করে আছেন ৷ তখন অনেকে তাঁকে বললে—তুমি কি বল?

 স্বামীজী উত্তরে বললেন — L-O-V-E personified—প্রেমের মূর্তবিগ্রহ। 

ঠাকুরকে তিনি এইভাবে দেখেছেন।

 ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর সম্বন্ধ ছিল অদ্ভুত৷ ঠাকুরের কাছে তিনি যে আত্মসমর্পণ করেছেন তা একদিনে নয়। ঠাকুরের সঙ্গে তিনি অনেক দ্বন্দ্ব করেছেন, বলেছেন— তাঁর সঙ্গে এমন লড়াই বোধহয় আর কেউ করেনি! 

পদে পদে তিনি ঠাকুরের কথার প্রতিবাদ করেছেন, তর্ক করেছেন,  আর বলেছেন—প্রতিবারই হারতে হয়েছে৷

 যে-ঠাকুর লেখাপড়া জানতেন না, শিষ্ট সমাজে চলার উপযুক্ত কি না সন্দেহ—তাঁর কাছে স্বামীজী বারবার পরাভূত৷ কেন? 

কারণ, ঠাকুরের যে অপূর্ব শক্তি, তার কাছে কে না পরাস্ত হয়!

কাশীপুরে মহাসমাধির আগে তিনি নরেন্দ্রনাথকে তাঁর সমস্ত আধ্যাত্মিক শক্তি সমর্পণ করলেন। স্বামীজী অনুভব করেছিলেন ঠাকুরেরাদেহ থেকে তড়িৎকম্পনের মতো সূক্ষ্ম তেজোরশ্মি তাঁর দেহমধ্যে প্রবেশ করছে৷

 তিনি বাহ্যজ্ঞান হারালেন৷ 

চেতনা লাভ করে তিনি দেখলেন ঠাকুরের চক্ষে অশ্রুবর্ষন হচ্ছে৷

 তাতে অতীব চমৎকৃত হয়ে এরূপ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ঠাকুর বললেন,— " আজ যথাসর্বস্ব তোকে দিয়ে ফকির হলুম৷ তুই এই শক্তিতে জগতের কাজ করবি ৷ কাজ শেষ হলে পরে ফিরে যাবি৷"

ঠাকুরের অশ্রুবর্ষন দুঃখে নয়— এ আনন্দাশ্রু৷ 

    তিনি এমন একজন উত্তরাধিকারীকে পেয়েছেন, যার ওপর তাঁর জগদুদ্ধারকার্যের যে আদর্শ, তাকে রূপায়িত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

এই শক্তিমান ব্যক্তিই তাঁর পতাকা বহন করে চারদিকে নিয়ে যাবেন, বিশ্বজয় করবেন ৷

স্বামীজী ধর্মজীবনকে নতুনভাবে আমাদের কাছে পরিবেশন করেছেন। 

তিনি ঠাকুরের কাছ থেকে তা পেয়েছেন৷

 স্বামীজী না বললে আমরা কেউ ঠাকুরকে বুঝতে পারতাম না যে, তিনি এই তত্ত্ব প্রকাশ করতে দেহধারণ করে এসেছেন৷ 

ঠাকুরকে আমরা সাধারণভাবে একজন খুব উঁচুদরের ভক্ত বা উঁচুদরের জ্ঞানী, বড়জোর একজন মহাপুরুষ ভাবতে পারতাম৷

 কিন্তু জগতে একটা পরিবর্তন এনে দিতে পারে, এমন বিপুল শক্তি যে তাঁর ভিতর দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে—একথা স্বামীজীর সাহায্য ছাড়া আমরা কখনো বুঝতে পারতাম না৷ 

            -স্বামী ভূতেশানন্দ


জয় ঠাকুর মা স্বামীজী

🙏🙏🌼🌻🙏🙏



অদ্বিতীয় বিবেকানন্দ


 


🌼🌿🌼🌿🌼🌿🌼🌿


🏵️অদ্বিতীয় বিবেকানন্দ🏵️


🌸একবার স্বামীজি রাজস্থানের কোন এক স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু কোন কারণে তিনি ট্রেনে উঠতে পারেননি। তখন তিন দিন ওই স্টেশনেই ছিলেন। সেই সময় অনেক লোক তাঁর কাছে আসতেন ও ধর্ম প্রসঙ্গে আলোচনা করতেন। দিনরাত লোকের আসা যাওয়ার অভাব নেই, কথারও শেষ নেই। কিন্তু স্বামীজির খাওয়া হয়েছে কি না, তিনি কিছু খাবেন কি না, কেউই ভুলেও জিজ্ঞাসা করতেন না। এমনি করে দু-দিন দু-রাত কেটে গেল। তৃতীয় দিন, সারাদিন কেটে গেল, রাত্রে অনেক আলোচনার শেষে সকলে যে যার মত চলে গেল। 

এমন সময় একজন অতি দীনহীন ব্যক্তি এসে স্বামীজিকে জিজ্ঞাসা করল, 'মহারাজ, আপনি তিন দিন তো অনর্গল কথা বলে চলেছেন, কিন্তু আপনার তো কিছুই খাওয়া জোটেনি, এই দেখে আমি খুব কষ্ট পাচ্ছি।' স্বামীজি ভাবলেন, দীনের বেশ ধরে স্বয়ং নারায়ণ এসেছেন তাঁর কাছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, 'তুমি আমায় কিছু খেতে দেবে?' সে তখন নম্র স্বরে বলল, 'আমার প্রাণ তো তাই চায়, কিন্তু আমার তৈরি রুটি আপনাকে দেব কি করে? যদি আজ্ঞা করেন তো আমি আটা ডাল এনে দিই, আপনি ডাল-রুটি বানিয়ে নিন।' স্বামীজি তখন নিয়ম করেছিলেন, আগুন ছোঁবেন না, তাই বললেন, 'তোমার তৈরি রুটি আমায় দাও, আমি তাই খাব।' শুনে সে ভয়ে জড়সড় হয়ে গেল। লোকটা খেতড়ি-রাজের প্রজা। যদি রাজা জানতে পারেন যে, সে চামার হয়েও সন্ন্যাসীকে রুটি তৈরি করে খাইয়েছে, তাহলে তার বড় রকমের শাস্তি হতে পারে, এমনকি রাজ্য থেকে বিতাড়িতও হতে পারে। ভয়ের কারণ জানতে পেরে স্বামীজি বললেন, 'ভয় নেই, রাজা তোমাকে শাস্তি দেবেন না।' স্বামীজীর কথায় সে হয়তো একটু বল পেল। তখন সে সাধুসেবার সুযোগ পেয়ে স্বামীজীকে রুটি তৈরি করে দিল। স্বামীজি গিরিশবাবুকে বললেন, 'সে সময় দেবরাজ ইন্দ্র স্বর্ণপাত্রে সুধা এনে দিলেও তেমন তৃপ্তিকর হত কিনা জানি না।' স্বামীজি দেখলেন, দীনহীন চামার শ্রেণীর মানুষটির মতো কত দয়াবান উচ্চ হৃদয়ের ব্যক্তি সামান্য কুঁড়েঘরে বাস করে, সমাজের ভদ্রলোকেরা যাদের ঘৃণার চোখে দেখে থাকে! স্বামীজীকে চামারের হাতে তৈরি রুটি খেতে দেখে স্টেশনের কয়েকজন 

ভদ্রলোক বললেন, 'আপনি যে নীচ লোকের ছোঁয়া খাবার খেলেন, এটা কি ভালো হল?' স্বামীজি দৃঢ়স্বরে বলে উঠলেন, 'তোমরা তো এতগুলো লোক তিন দিন ধরে আমায় খুব বকালে, কিন্তু আমি কিছু খেলাম কি না, তার কি খোঁজ নিয়েছিলে? অথচ এই ব্যক্তি ছোটলোক, আর নিজেরা ভদ্র বলে বড়াই করছ? ও যে মনুষ্যত্ব দেখিয়েছে, তাতে ও নীচ হল কি করে?' পরে খেতড়ি-রাজের সঙ্গে দেখা হলে স্বামীজি রাজাকে এই ঘটনা শুনিয়েছিলেন। শুনে রাজা ওই দীন দরিদ্র চামার লোকটাকে ডেকে পাঠালেন। সে তো ভয়েই মরে! কাঁপতে কাঁপতে কোন রকমে রাজার সামনে হাজির হল — না জানি আজ কপালে কি শাস্তি লেখা আছে! কিন্তু মহারাজা তাকে সাধুবাদ দিলেন ও রাজার কৃপায় সেই থেকে তার দারিদ্র্যও দূর হল।


🙏🙏🙏🙏


🙏🙏জয় ঠাকুর মা স্বামীজী 🙏🙏

 



🌻🌿🌻🌿

একদিন ট্রামে পরের গচ্ছিত ২০০ টাকা তার পকেট থেকে মারা যায়, বাড়ি এসে তা দেখে। ব্যাকুল হয়ে গঙ্গার ধারে গিয়ে কাঁদছে, ‘হায় ঠাকুর, কী করলে!’ তার অবস্থাও তেমন ছিল না যে নিজে ঐ টাকা শোধ করবে। আহা, কাঁদতে কাঁদতে দেখে ঠাকুর সামনে এসে বলছেন, ‘কাঁদছিস্ কেন? ঐ গঙ্গার ধারে ইটচাপা আছে দ্যাখ।’ সে তাড়াতাড়ি উঠে ইটখানা তুলে দেখে, সত্যই এক তাড়া নোট! শরতের কাছে এসে সব বললে। শরৎ শুনে বললো, তোরা তো এখনো দেখা পাস, আমরা কিন্তু আর পাইনে।’ ওরা পাবে কি? ওরা তো দেখে শুনে এখন গ্যাঁট হয়ে বসেছে। যারা ঠাকুরকে দেখেনি, এখন তাদেরই ব্যাকুলতা বেশি। যদি শুদ্ধ মন হয়, কেন ধ্যানধারণা হবে না? কেন দর্শন হবে না? জপ করতে বসলুম তো আপনা হতেই ভিতর থেকে গরগর করে নাম উঠতে থাকবে, চেষ্টা করে নয়। জপধ্যান সব যথাসময়ে আলস্য ত্যাগ করে করতে হয়।’ -মা সারদা দেবী


🌼🌿🌼🌿


‘দক্ষিণেশ্বরে একদিন শরীরটা খারাপ লাগায় একটু দেরিতে উঠেছি। তখন রাত তিনটায় উঠতুম। পরদিন আরও দেরিতে উঠলুম। ক্রমে দেখি আর সকালে উঠতেই ইচ্ছা যাচ্ছে না। তখন মনে হল, ওরে এইতো আলস্য পেয়েছে। তারপর জোর করে উঠতে লাগলুম, তখন সব পূর্বের মত হতে লাগল। এসব বিষয়ে রোক করে অভ্যাস রাখতে হয়।’ -মা সারদা দেবী 


🙏🙏🌻🌿🌻🌿🙏🙏

সকলের স্বামীজী

 




🌼🌿🌼🌿🌼🌿
বেলুড় মঠে স্বামীজী যে-ঘরে থাকতেন তার পাশের ঘরেই থাকতেন স্বামী বিজ্ঞানানন্দ। একদিন রাত দুটোর সময় বিজ্ঞানানন্দের ঘুম ভেঙে গেল। বাইরে বেরিয়ে দেখলেন, স্বামীজী বারান্দায় অস্থিরভাবে পায়চারি করছেন। বিজ্ঞানানন্দ জিজ্ঞাসা করলেন : “কি স্বামীজী ! আপনার ঘুম হচ্ছে না?? স্বামীজী বললেন : “বেশ ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ যেন একটা ধাক্কা লাগল আর আমার ঘুম ভেঙে গেল। আমার মনে হয়, কোন জায়গায় একটা দুর্ঘটনা হয়েছে এবং অনেক লোক তাতে দুঃখ-কষ্ট পেয়েছে।' বিজ্ঞানানন্দ মনে মনে হাসলেন : “কোথায় কি দুর্ঘটনা হল আর স্বামীজীর এখানে ঘুম ভেঙে গেল—এটা কি সম্ভব!' কিন্তু আশ্চর্য! পরদিন সকালের খবরের কাগজে দেখা গেল, ফিজির কাছে একটা দ্বীপে অগ্ন্যুৎপাত হয়ে বহু লোক মারা গেছে। অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছিল ঠিক সেই সময়টায়- —যে সময় কিসের যেন আঘাতে স্বামীজীর ঘুম ভেঙে গিয়েছিল।

🌻🌿🌻🌿🌻🌿


✍️Book name:- সবার স্বামীজী🌼

মানসপুত্র নেতাজী

 🌿 মানসপুত্র নেতাজী 🍁 🌻১৯০২ সালের জানুয়ারীতে সুভাষচন্দ্রের পিতা তাঁকে কটকের মিশনারী স্কুলে ভর্তি করে দিলেন, পুত্রের প্রাথমিক বিদ্যা লাভে...