Wednesday 13 January 2021

Swami Vivekananda's childhood memories

স্বামীজীর শৈশব কালের কিছু কথা ও ঘটনা:


🏵️☘️🏵️☘️🏵️☘️

নরেন্দ্র খুব সুন্দর গল্প বলতে পারতেন। তাঁর কথা এবং ব্যক্তিত্বের এমন আকর্ষণ ছিল যে, তিনি গল্প আরম্ভ করলে সবাই সব কাজ ভুলে তাঁর কথাই শুনত। স্কুলে ক্লাসের ফাঁকে একদিন তিনি গল্প করছেন। গল্প এত জমে গেছে যে, শিক্ষক এসে পড়াতে শুরু করলেও সকলে পড়ার দিকে মন না দিয়ে তাঁর কথাই শুনছে। কিছুক্ষন পর শিক্ষক ফিসফিস শব্দ শুনে ব্যাপারটা বুঝতে পারলেন। বিরক্ত হয়ে তিনি এক এক করে সবাইকে পরীক্ষা করলেন তিনি যা পড়াচ্ছিলেন তারা তা শুনেছে কিনা। কেউ উত্তর দিতে পারল না। কিন্তু নরেন্দ্র মন ছিল দুমুখো, গল্পের ফাঁকেও তিনি মনের একটা অংশ পড়ার দিকে রেখে দিতেন। তাই শিক্ষক যখন নরেন্দ্রনাথকে পড়া জিজ্ঞাসা করলেন, নরেন্দ্র নির্ভুল উত্তর দিলেন। শিক্ষক তখন জিজ্ঞাসা করলেন : এতক্ষন কে কথা বলছিল? সকলে নরেন্দ্রকে দেখিয়ে দিল। শিক্ষকের তা বিশ্বাস হলো না। তিনি নরেন্দ্র ছাড়া আর সবাইকে দাঁড়িয়ে থাকতে বললেন। সকলের সঙ্গে নরেন্দ্রও উঠে দাঁড়ালেন। শিক্ষক বললেন : " তোমাকে দাঁড়াতে হবে না।" নরেন্দ্র বললেন : "না, আমাকেও দাঁড়াতে হবে, কারণ আমিই তো কথা বলছিলাম।" তিনি দাঁড়িয়েই রইলেন।

                                   🏵️☘️🏵️☘️🏵️☘️

                          **********

🍁🌿🍁🌿🍁🌿

নরেন্দ্রনাথের বাবা  বিশ্বনাথ দত্ত মুক্তহস্তে দান করতেন। তার মধ্যম পুত্র মহেন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছেন: "গরিব-দুঃখীকে দান করা তাঁহার যেন একটা ব্যামোর মতো ছিল।" পাড়ায় তাঁর নাম হয়েছিল দাতা বিশ্বনাথ। কারও অর্থকষ্ট দেখলে তিনি নিজেকে সামলাতে পারতেন না। দূরসম্পর্কের অনেক ছাত্র তাঁর বাড়িতে থেকে তাঁরই খরচে পড়াশুনা করত। পাড়া-প্রতিবেশি কেউ অভাবে পড়লে তিনি জানতে পারলেই তাকে সাহায্য করতেন। এ ব্যাপারে তিনি ছিলেন সম্পূর্ন বেহিসাবী। তাঁর এই নির্বিচারে দানের সুযোগে অনেক নেশাখোর এসে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেশা করে বেড়াত। একদিন নরেন্দ্রনাথ বিশ্বনাথবাবুর দানের এইরকম অপব্যবহারের কথা তাঁর কানে তুললে বিশ্বনাথবাবু তাঁকে বলেছিলেন : "জীবনটা যে কত দুঃখের তা তুই এখন কি বুঝবি? যখন বুঝতে পারবি, তখন এ দুঃখের হাত থেকে ক্ষণিক নিস্তার পাওয়ার জন্য যারা নেশাভাঙ করে তাদের পর্যন্ত দয়ার চোখে দেখবি।" বাবার এই উপদেশের পূর্ণতার রূপ নরেন্দ্রনাথ দেখেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণের জীবন ও বানীর মাধমে। "দয়ার দৃষ্টি" "শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে" পরিণত হয়েছিল। কারণ, শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁকে শিখিয়েছিলেন : দয়াও ছোট কথা। মানুষ ঈশ্বরের জীবন্ত রূপ। ঈশ্বরকে কি আমরা দয়া করবার কথা ভাবি? ঈশ্বরের সেবা করে, পূজা করে আমরা ধন্য হই। তাই দয়া নয়, শিবজ্ঞানে জীবসেবা। মানুষকে ভগবান ভেবে সেবা। কোনো মানুষই ঘৃণ্য নয়। যে পাপী সেও আসলে ভগবান। " চোররূপী নারায়ন, লুচ্চারূপী নারায়ন।" পরবর্তীকালে স্বামী বিবেকানন্দ তাই জগতের প্রতিটি মানুষকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেছেন― যে অধঃপতিত তাকেও। বলতেন: "God the wicked" , "God the sinner" ― দুর্জন, পাপী সকলেই ভগবান। আর বলতেন : " যদি একজনের মনে ―এ সংসার-নরকুণ্ডের মধ্যে একদিনও একটু আনন্দ ও শান্তি দেওয়া যায়, সেইটুকুই সত্য, এই তো আজন্ম ভুগে দেখছি।"

                                    🌿🍁🌿🍁🌿🍁


*সংগৃহিত*

Book name:- সবার স্বামীজী

স্বামী লোকেশ্বরানন্দ 


🌺জয় ঠাকুর 🌺 জয় মা 🌺 জয় স্বামীজী🌺

🌿🌻জয় ঠাকুর মা স্বামীজী🌻🌿

No comments:

Post a Comment

মানসপুত্র নেতাজী

 🌿 মানসপুত্র নেতাজী 🍁 🌻১৯০২ সালের জানুয়ারীতে সুভাষচন্দ্রের পিতা তাঁকে কটকের মিশনারী স্কুলে ভর্তি করে দিলেন, পুত্রের প্রাথমিক বিদ্যা লাভে...