Tuesday 23 January 2024

মানসপুত্র নেতাজী



 🌿 মানসপুত্র নেতাজী 🍁


🌻১৯০২ সালের জানুয়ারীতে সুভাষচন্দ্রের পিতা তাঁকে কটকের মিশনারী স্কুলে ভর্তি করে দিলেন, পুত্রের প্রাথমিক বিদ্যা লাভের জন্য। কিন্তু মাত্র পাঁচ মাস পরে অর্থাৎ ১৯০২ সালের জুলাই মাসে এক কঠিন পীড়ায় কাতর হয়ে পড়লেন, পাঁচ বছর ছয় মাস কয়েকদিন বয়সের শিশু সুভাষ।


কটকে তখন নামকরা ডাক্তারের অভাব সর্বজনবিদিত। তবু তার মধ্যেই, ভালো ভালো ডাক্তারের এমনকি শেষ পৰ্যন্ত কলকাতা থেকেও বড় ডাক্তারের ব্যবস্থা করেছিলেন জানকীনাথ বসু। কিন্তু ঠিক ৪ঠা জুলাইয়ের রাত্রে সুভাষের অবস্থা অত্যন্ত চরমে উঠলো -- জীবন ও মৃত্যুর প্রতিযোগীতা আরম্ভ হল।


সেদিন সন্ধ্যা থেকেই বাদলের বারিধারা বোধকরি আকুল হয়ে কেঁদেছিলো; ক্ষণে ক্ষণে ক্ষীণ চাঁদ বিস্ময় বিস্ফারিত নেত্রে উঁকি মেরে দেখতে চেষ্টা করছিল শিশু সুভাষের অসাড় নিস্পদ দেহখানা। রাত্রি প্রায় তখন ন'টা। আকস্মাৎ ! ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলেন 'গৌরিক উত্তরীয় পরিধানে এক সুদর্শন দিব্যপুরুষ'। চেতনাহীন সুভাষের পিতা ও মাতা এই দৃশ্য দেখে হতবাক !


ভাবগম্ভীর সেই 'দিব্যপুরুষ' চেতনাহীন সুভাষের বক্ষস্থলে ধীরে ধীরে বার কয়েক হাত বুলিয়ে দিয়ে তিনি নিঃশব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। কাউকে কোনো কিছু বলবার অবকাশও দিলেন না -- ঐ সুদর্শন দিব্যপুরুষ। ঐ ন'টা দশ মিনিটে একটা চরম অবস্থাকে অতিক্রম করে সুভাষ যেন পুনঃজন্ম লাভ করলেন।


আরো আশ্চৰ্য্য ! ঐ ১৯০২ সালের ৪ঠা জুলাই শুক্রবার স্বামী বিবেকানন্দ মহাসমাধি লাভ করলেন। ..... এ এক অতি আশ্চৰ্য্য যোগাযোগ ! হয়তো মহাসমাধির পূর্বে আপন আত্মাকে স্বামীজী সুভাষের দেহে দিয়ে গেলেন ! আত্মা অবিনশ্বর -- তাই সেই আত্মা সুভাষের দেহে প্রাণ পেল। স্বামীজী ও সুভাষ তাই একই আত্মার ভিন্ন দুটি লীলা বলা চলে। এই ঘটনার পর থেকেই সুভাষ ক্রমে সুস্থ হয়ে উঠতে লাগলেন।


পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেব যেমন নরেন্দ্রনাথকে স্বামী বিবেকানন্দ'য় পরিনত করেছিলেন -- ঠিক তেমনভাবে স্বামীজীও সুভাষচন্দ্রকে বিশ্বপিতায় রূপান্তরিত করে দিয়ে গেলেন।🏵️


🌿নেতাজী তাঁর আদর্শ স্বামীজী সম্বন্ধে বলছেন.........


★"আজ তিনি জীবিত থাকলে, আমি তাঁর চরণেই আশ্রয় নিতাম। আজ যদি স্বামীজী জীবিত থাকতেন, নিশ্চয়ই তিনি আমার গুরু হতেন অর্থাৎ তাঁকে আমি নিশ্চয় গুরুপদে বরণ করতাম।"


★"শ্রীরামকৃষ্ণ ও স্বামী বিবেকানন্দের নিকট আমি যে কত ঋণী তাহা ভাষায় কী করিয়া প্রকাশ করিব? তাঁহাদের পুণ্য প্রভাবে আমার জীবনের প্রথম উন্মেষ। চরিত্রগঠনের জন্য ‘রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ সাহিত্য’ অপেক্ষা উৎকৃষ্ট সাহিত্য আমি কল্পনা করিতে পারি না।"


★"বিবেকানন্দের কথা বলতে গেলে হারিয়ে ফেলি নিজেকে। কে বুঝবে তাঁকে -কে বুঝেছে তাঁকে? অসম্ভব। সুগভীর তিনি, জটিল, ঋদ্ধময়। ত্যাগে বেহিসেবী, কর্মে বিরামহীন, প্রেমে সীমাহীন, জ্ঞানে সমুদ্রগভীর, সমালোচনায় অগ্নিবর্ষী, আর সারল্যে -শিশু -একেবারে শিশু। এ জগতে তাঁর তুল্য কেউ নেই, কেউ নয় ...আমি কে, যে বলব তাঁর কথা?"

                                       —নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু🌿 


🌟আজ নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর শুভ জন্মদিনে জানাই বিনম্র প্রণতি।

🧡জয় হিন্দ!!!


🙏🧡শুভ জন্মদিন হে নেতাজী ❤️ 🙏


জয় স্বামীজী 

জয় নেতাজী 

#

(সংগৃহীত)


🌿🌻🙏🏻জয় দিব্য ত্রয়ী 🙏🏻🌻🌿

🌿🍁🌿🍁🌿🍁🌿🍁🌿🍁🌿🍁

Thursday 18 January 2024

স্বাধীন ইচ্ছা

 


মানুষের স্বাধীন ইচ্ছা বলে কিছু আছে কিনা — এই নিয়ে স্বামী নিরঞ্জনানন্দের সঙ্গে স্বামী সারদানন্দের একদিন অনেকক্ষণ আলোচনার পর তাঁরা শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে যান প্রশ্নটির মীমাংসার জন্য ৷


শ্রীরামকৃষ্ণ বলেন : "স্বাধীন ইচ্ছা-ফিচ্ছা কারও কিছু কি আছে রে ? ঈশ্বরেচ্ছাতেই চিরকাল সব হচ্ছে ও হবে ৷ মানুষ ঐ কথা শেষকালে বুঝতে পারে ৷ তবে কি জানিস, গরুটাকে লম্বা দড়ি দিয়ে খোঁটায় বেঁধে রেখেছে — গরুটা খোঁটার এক হাত দূরে দাঁড়াতে পারে, আবার দড়িগোছটা যত লম্বা ততদূরে গিয়েও দাঁড়াতে পারে ৷ মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাটাও ঐরূপ জানবি ৷ গরুটা এতটা দূরের ভিতর যেখানে ইচ্ছা, যতটা ইচ্ছা ব্যবহার করুক, বলে ছেড়ে দিয়েছেন ৷ তাই মানুষ মনে করছে সে স্বাধীন ৷ দড়িটা কিন্তু খোঁটায় বাঁধা আছে ৷ তবে কি জানিস ? তাঁর কাছে কাতর হয়ে প্রার্থনা করলে, তিনি নেড়ে বাঁধতে পারেন, দড়িগোছটা আরও লম্বা করে দিতে পারেন, চাই কি গলার বাঁধন একেবারে খুলেও দিতে পারেন ৷"


শুনে শ্রোতারা বললেন, তাহলে তো সাধনভজন করাতে মানুষের হাত নেই ? আর, তাহলে তো সকলেই বলতে পারে — আমি যা কিছু করছি তাঁর ইচ্ছাতেই করছি ৷ এই পরের যুক্তিটি আমাদের মধ্যে অনেকেই ব্যবহার করতে ভালবাসেন ৷


শ্রীরামকৃষ্ণ বলছেন : "মুখে শুধু বললে কি হবে রে ?....কাঁটায় হাত পড়লেই কাঁটা ফুটে 'উঃ' করে উঠতে হবে ৷ সাধনভজন করাটা যদি মানুষের হাতে থাকত, তবে তো সকলেই তা করতে পারত ৷ তা পারে না কেন ? তবে কি জানিস, যতটা শক্তি তিনি তোকে দিয়েছেন ততটা ঠিক ঠিক ব্যবহার না করলে তিনি আর অধিক দেন না ৷ ঐ জন্যই পুরুষকার বা উদ্যমের দরকার ৷ দেখ না, সকলকেই কিছু না কিছু উদ্যম করে তবে ঈশ্বরকৃপার অধিকারী হতে হয় ৷....( তাঁর উপর নির্ভর করে ) কিছু কিছু উদ্যম করতেই হয় ৷"

বুঝিয়ে দিলেন কৃপার রাজ্যেও উদ্যম ও পুরুষকারের স্থান আছে ৷ ওটিই চাই ৷


স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলতেন : "কৃপা মানে 'করে পাওয়া' ৷ অর্থাৎ সাধনা করলে কৃপা আসে ৷ এই প্রসঙ্গে শ্রীমায়ের একটি কথাও উল্লেখযোগ্য ৷ মা বলছেন : "ইচ্ছে হলেই তো হয় না ৷ ইচ্ছে পূরণ তো মানুষের হাতে নয় ৷ তাঁর ইচ্ছায় সব হয় ৷"


                                        — স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ ৷


🙏🏻❤️ জয় ঠাকুর মা স্বামীজী ❤️🙏🏻

শ্রী রামকৃষ্ণদেবের যীশু দর্শন

 


ভগবান রামকৃষ্ণ দেবের গৃহী ভক্ত যদুলাল মল্লিকের বাগান বাড়িতে ঠাকুর(রামকৃষ্ণ) বেড়াতে গেলে উপস্থিত কর্মচারীরা বাবুদের বৌঠক খানা খুলে ঠাকুরকে সেখানে বসতে অনুরোধ করেন।ঐ বৈঠক খানায় অনেক সুন্দন সুন্দর ছবি ছিল।তার মধ্যে মা মেরীর কোলে শিশুযীশুর একখানি ছবিও ছিল।এক দিন ওই ঘরে বসে ঠাকুর ছবিখানি তন্ময় হয়ে দেখছেন আর যীশুর কথা ভাবছেন, 

এমন সময় ছবিটি যেন জিবন্ত জ্যোতির্ময় হয়ে উঠল ও সেই অদ্ভুত দেবমাতা ও দেবশিশুর অঙ্গ থেকে অনেক জ্যোতিরশ্মি বেরিয়ে ঠাকুরের ভেতর ডুকে যেতে আরম্ভ করল।সেই সঙ্গে জন্মগত হিন্দুসংস্কারসমূহ লীন হয়ে গিয়ে যিশুখ্রিস্ট ও তার প্রবর্তিত সম্প্রদায়েরর প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা বিশ্বাসে ঠাকুরের মন ভরে যেতে থাকল।তিন দিন পর্যন্ত ঠাকুরের এই ভাব ছিল।তিন দিন পড়ে যখন পঞ্চবটি তলায় বেড়াচ্ছেন তখন দেখলেন 

তখন দেখলেন সুন্দর গৌড়বর্ণ এক দেবমানব স্থির দৃষ্টিতে ঠাকুরের দিকে এগিয়ে আসছেন।দেখতে দেখতে সেই মূর্তি কাছে এগিয়ে এল,এবং ঠাকুরের পবিত্র অন্তঃকরণ থেকে আপনিই ধ্বনিত হতে লাগলো -'ঈশামসি' অর্থাৎ ভগবান যিশু। যিশুখ্রিস্ট এসে ঠাকুরকে আলিঙ্গন করলেন ও ঠাকুরের শরীরে লীন হয়ে গেলেন, ভাবাবিষ্ট অবস্থায় ঠাকুর বাহ্যজ্ঞান হারালেন। এইভাবে প্রত্যক্ষ দর্শন লাভ করে ঠাকুর স্থিরনিশ্চয় হয়েছিলেন যে,যিশুখ্রিস্ট একজন অবতার-পুরুষ।।


ঠাকুরের দেহে যীশুর লীন হয়ে যাওয়ার ঘটনা সাক্ষরাখে যে ঠাকুর ও যীশু অভেদ আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই, 

রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের বিভিন্ন শাখায় ও গৃহীভক্তরা তাদের গৃহে যীশু আরাধনা করেন।

এটি বস্তুত ঠাকুরের আরাধনা হিসেবেই গন্য করা হয়।।


#collected 


🎈🎁জয় ঠাকুর মা স্বামীজী ❤️🙏🏻


সবাইকে শুভ বড়দিনের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই🙏🏻❤️


ঠাকুর সকলের মঙ্গল করুন❤️🙏🏻

রামকৃষ্ণ মিশনে যীশুপুজোর উৎস সন্ধানে

 



রামকৃষ্ণ মিশনে যীশুপুজোর উৎস সন্ধানে:-

_________________________________


“বিভিন্ন দর্শনের তুলনায় দেখা যায়, হিন্দুদর্শনের প্রবণতা ধ্বংস করা নয়, বরং প্রত্যেক বিষয়ে সমন্বয় সাধন করা। যদি ভারতে নতুন কোন ভাব আসে আমরা তার বিরোধিতা করি না, বরং তাকে আত্মসাৎ করে নিই, অন্যান্য ভাবের সঙ্গে মিলিয়ে নিই... তাই আমরা কোন ধর্ম বা ধর্মগ্রন্থকে প্রত্যাখ্যান করতে পারি না।... পৃথিবীর যেখানেই দেখবে অসাধারণ কোন পবিত্র মানব মানুষের উন্নতির জন্যে চেষ্টা করছেন, জেন—তাঁর মধ্যে ভগবানই রয়েছেন। অতএব বুঝতে পারছ, কেন আমরা কোন ধর্মের সঙ্গে লড়াই করি না। আমরা কখনও বলি না, আমাদের ধর্মই মুক্তির একমাত্র রাস্তা। যে-কোন মানুষ সিদ্ধাবস্থা লাভ করতে পারে—তার প্রমাণ? প্রত্যেক দেশেই দেখি পবিত্র সাধু পুরুষ রয়েছেন, আমার ধর্মে জন্মগ্রহণ করুন বা না করুন—সর্বত্র সদ্ভাভাবাপন্ন নরনারী দেখা যায়। অতএব বলা যায় না, আমার ধর্মই মুক্তির একমাত্র পথ। ‘অসংখ্য নদী যেমন বিভিন্ন পর্বত থেকে বেরিয়ে একই সমুদ্রে তাদের জলধারা মিশিয়ে দেয়, তেমনি বিভিন্ন ধর্ম বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্ভূত হয়ে তোমারই কাছে আসে’—এটি ভারতে ছোট ছেলেদের প্রতিদিনের একটি প্রার্থনার অংশ। যারা প্রতিদিন এই ধরনের প্রার্থনা করে, তাদের পক্ষে ধর্মের বিভিন্নতা নিয়ে মারামারি করা একেবারেই অসম্ভব।”


— স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা/পঞ্চম খণ্ড/ভারত-প্রসঙ্গে/হিন্দু ও খ্রীষ্টান/পৃষ্ঠাঃ ৩২২-৩২৩


ঐতিহ্য মেনে প্রতিবছরই ক্রিস্টমাস ইভে বেলুড় মঠ সহ রামকৃষ্ণ মিশনের সমস্ত শাখায় ভগবান যীশুখ্রীস্টের পুজো অনুষ্ঠিত হয়। এই নিয়ে অনেকের মনেই কিছু বিভ্রান্তি, কিছু প্রশ্ন দেখা যায়। কেন হয় রামকৃষ্ণ মিশনে যীশুপুজো? কবে থেকে চালু হয়েছিল? কে চালু করেছিলেন? স্বামী বিবেকানন্দের সাথে এই যীশুপুজোর কি কোন সম্পর্ক আছে? চার্চের খ্রীস্টমাস আর এই যীশুপুজো কি এক? আজ আমরা প্রকৃত ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রশ্নগুলির উত্তর অনুসন্ধান করব।


রামকৃষ্ণ মিশনে ক্রিস্টমাস ইভে হওয়া এই যীশুপুজোর উৎস সন্ধানে আমাদের যেতে হবে স্বামী বিবেকানন্দের সন্ন্যাসজীবনের আদিপর্বে—যখন তিনি নরেন্দ্রনাথ দত্ত—স্বামী বিবেকানন্দ তো দূর, স্বামী বিবিদিষানন্দও হন নি। মহেন্দ্রনাথ দত্ত বরাহনগর মঠের সেই সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখছেন—


“এই সময় বাইবেল পড়া খুব চলিত। নরেন্দ্রনাথ শরৎচন্দ্রকে ও অপর সকলকে বাইবেল উপাখ্যান বলিতেন ও Nicodemus-এর উপাখ্যানটা সর্বদাই আবৃত্তি করিতেন। নরেন্দ্রনাথ কি এক মহাভাবে বিভোর হইয়া চক্ষু নিমীলিত করিয়া প্রায় এই কথাটি উচ্চারণ করিতেন, “Thou shalt be born again.” সময় অসময় Nicodemus-এর গল্পটি মুখে লাগিয়া থাকিত যীশু যেমন নিজের লইয়া একটা সঙ্ঘ করিয়াছিলেন এবং শিষ্যেরা যীশুর অন্তর্ধানের পর পরস্পরে প্রগাঢ় ভালবাসার সহিত একীভূত হইয়াছিলেন, নরেন্দ্রনাথও সেই দৃশ্যটি চোখে রাখিয়া আপনার অল্পবয়স্ক গুরুভাইদিগকে অজ্ঞাতভাবে শুনাইতে লাগিলেন। যীশুর জীবনটা যেন সেই সময় তাহার আদর্শ হইয়াছিল এবং শরৎ মহারাজেরও সেই ভাবটি তখন প্রবল হইয়া উঠিয়াছিল। হইবারই ত কথা। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণের আত্মত্যাগ ও ভগবানের উপর নির্ভরতা, অমানুষিক ভালবাসা এবং অল্পবয়স্ক কতিপয় যুবক একত্রিত হইয়া মনপ্রাণ দিয়া ভগবান লাভের জন্য গুরুর শুশ্রূষা করিতেছে,—যীশুর সহিত এই অবস্থার সৌসাদৃশ্য খুবই হইয়াছিল। যীশুর ছবি আনিয়া দেওয়ালে রাখিতে লাগিলেন। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকে দেখিয়া যীশুর ভাব বুঝিতে লাগিলেন বা যীশুর বই পড়িয়া শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকে বুঝিতে লাগিলেন। একভাব অপর ভাবকে প্রক্ষুটত করিতে লাগিল। এই জন্যই নরেন্দ্রনাথের গল্পটি এমন ভাল লাগিত এবং নিতান্ত অনুগত শরৎচন্দ্রও সেই গল্পটি মনেপ্রাণে হৃদয়ঙ্গম করিতে লাগিলেন।”


— মহেন্দ্রনাথ দত্ত/শ্রীমৎ বিবেকানন্দ স্বামীজীর জীবনের ঘটনাবলী/প্রথম খণ্ড/নরেন্দ্রনাথের যীশুর ভাবে সাধন/পৃষ্ঠাঃ ২৮-২৯


মহেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা অন্যান্য বইতে এই সময় বরাহনগর মঠে, নরেন্দ্রনাথ দত্ত এবং তাঁর গুরুভাইদের যীশুর ভাবে সাধনা করার বিস্তারিত বিবরণ আছে। এই অবস্থাতেই আরও একটি ঘটনা তাঁদের জীবনে ঘটে, যেটিকে রামকৃষ্ণ ভাবান্দোলনের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য সন্ধিক্ষণ (Turning Point) বললেও বিন্দুমাত্র অত্যুক্তি করা হয়না। স্বামী বিবেকানন্দের সব জীবনীতেই সেই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ আছে। তবে আমরা স্বামী প্রভানন্দের লেখা গবেষণা গ্রন্থ “রামকৃষ্ণ মঠের আদিকথা” থেকে এই বিষয়ে তথ্য নেব।


“এ সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। বাবুরাম-জননী মাতঙ্গিনী দেবীর আমন্ত্রণে নরেন্দ্র, তারক, শশী, কালী, বাবুরাম, শরৎ, নিরঞ্জন, গঙ্গাধর ও সারদা এই নয়জন আঁটপুরে উপস্থিত হয়েছিলেন ১৮৮৬ ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে। মাতঙ্গিনী দেবীর আদর-আপ্যায়নে তাদের দিন আনন্দে অতিবাহিত হয়। নির্জন গ্রামীণ পরিবেশে তাঁরা জপ-ধ্যান-ভজনে মেতে ওঠেন। মাঝে মধ্যে চলতে থাকে আমোদ-আহ্লাদ। সুযোগ পেলেই নরেন্দ্রনাথ গুরুভাইদের এক একজনকে বা একত্রে সকলকে শ্রীরামকৃষ্ণ- জীবনের তাৎপর্য ও তার ভবিষ্যভূমিকা সম্বন্ধে বলতে থাকেন। এক সন্ধ্যায় তরুণ ভক্তগণ একটি ধুনির চারদিকে শান্ত আকাশের নিচে বসে ধ্যান করতে থাকেন। ধ্যানান্তে সৎপ্রসঙ্গ করতে থাকেন নরেন্দ্রনাথ। তেজোদ্দীপ্ত কণ্ঠে উপস্থাপিত করেন যীশুখ্রীস্টের ত্যাগ ও বৈরাগ্যের জীবন। প্রসঙ্গক্রমে বলেন যীশু-শিষ্যদের তপস্যাপৃত জীবনগাথা, খ্রীস্টধর্ম-প্রচারে তাদের আত্মত্যাগের কথা। নরেন্দ্রনাথ যেন ভাবাবিষ্ট হয়ে গুরুভাইদের সামনে উন্মোচিত করেন রামকৃষ্ণ-মহিমার গৌরবোজ্জ্বল এক ভবিষ্যৎ। নেতা নরেন্দ্রনাথ আবেগের সঙ্গে আহ্বান করেন তাদের তন-মন-প্রাণ উৎসর্গ করার জন্য, তবেই শ্রীরামকৃষ্ণ-আবির্ভাব সার্থক হবে। উপস্থিত সকলের প্রাণে শিহরণ জাগে। তাঁরা সমবেতভাবে অগ্নিশিখাকে সাক্ষী রেখে সংসার-ত্যাগের চরম সংকল্প গ্রহণ করেন। পরে সে শুভক্ষণটি ভগবান যীশুর ‘আবির্ভাবের প্রাক-সন্ধ্যা’ জানতে পেরে সকলে বিস্মিত হন। এই ঘটনাটির গুরুত্ব নির্দেশিত করে তাপস তারকনাথ মন্তব্য করেছিলেন, ‘আঁটপুরেই আমাদের সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার সংকল্প দৃঢ় হলো। ঠাকুর তো আমাদের সন্ন্যাসী করে দিয়েছিলেনই—ঐ ভাব আরও পাকা হলো❤️🙏🏻🙏🏻❤️


🌻💮🙏🏻জয় ঠাকুর মা স্বামীজী 🙏🏻🏵️🌼

স্বামীজির বলা এক অদ্ভুত ঘটনা



স্বামীজী একদিন কথাপ্রসঙ্গে একটি অদ্ভুত ঘটনার কথা বললেন। তিনি অবশ্য ঘটনাটির কোনরকম ব্যাখ্যা দেবার চেষ্টা করেননি। শুধু বলে গেলেন:


''আমি তখন এক শহর থেকে আরেক শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছি আর একটার পর একটা বক্তৃতা দিয়ে যাচ্ছি। এমনও বহুদিন গেছে একই দিনে বেশ কয়েকটি সভায় বলতে হয়েছে।


একদিন মাঝরাতে ইজিচেয়ারে বসে বসে ভাবছি— আচ্ছা, অনেক তো বক্তৃতা দিলাম। যে-যে বিষয়ে আমি বিশেষভাবে চিন্তা-ভাবনা করেছি, তা তো সবই হয়ে গিয়েছে। এখন যাই বলতে যাবো সেটাই পুরনো কথার পুনরাবৃত্তি হবে, যেটা আমি চাই না, অথচ শিরে সংক্রান্তি! পরের দিনই একটা বক্তৃতা আছে। কি করি?


এইসব সাত-পাঁচ ভাবছি আর নিজের এই দুরাবস্থার জন্য মনে মনে ঠাকুরকে খুব দুষছি। এমনি সময় কি হলো জানো? হঠাৎ ঠাকুরের গলা শুনতে পেলাম। তিনি আমার উদ্দেশ্যে কথা বলে উঠলেন। সেই মুহূর্তে আমার চোখ বন্ধ ছিল; ফলে তাঁকে দেখতে পাইনি। শুধু তাঁর কণ্ঠস্বর শুনতে লাগলাম। একটানা বেশ কিছুক্ষণ বলবার পর তিনি বললেন: 'এই দেখ, তুই এই, এইভাবে বলবি। এর জন্য অত চিন্তা করছিস কেন?'

আমি খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলাম! কিন্তু, সে যাই হোক, পরবর্তী বক্তৃতার বিষয়বস্তু জানতে পেরে আমি তো খুব খুশি। কিন্তু আর কিছু বিস্ময় তখনো যে আমার জন্য অপেক্ষা করছে, তা জানতাম না। জানলাম পরদিন সকালে, যখন আমারই ঠিক পাশের ঘরের এক ভদ্রলোক এসে জিজ্ঞাসা করলেন, 'আচ্ছা মশাই, গতকাল রাতে আপনার সঙ্গে কে কথা বলছিলেন, বলুন তো? তিনি এমন একটি ভাষায় কথা বলছিলেন যে, আমি তাঁর বক্তব্যের বিন্দুবিসর্গও বুঝতে পারলাম না।'


'ঠাকুর বাংলাতেই কথা বলেছিলেন। যাই হোক, ওঁর কথা শুনে আমি একেবারে আশ্চর্য! আমি না হয় শুনলাম, কিন্তু পাশের ঘর থেকে উনি কি করে ঠাকুরের কণ্ঠস্বর শুনতে পেলেন, এ আমার কিছুতেই মাথায় এল না।''


🖋️—মন্মথনাথ গঙ্গোপাধ্যায়


জয় ঠাকুর মা স্বামীজী 🙏🏻❤️🌻🌼🌸💮🏵️🌺💐🙏🏻

Monday 11 December 2023

Ramkrishna mission


 


আজ ৯ই ডিসেম্বর, আজই সেই দিন। বড় পবিত্রতম আমাদের কাছে। 


একশ পঁচিশ বছর আগের কথা। স্বামীজী বেলুড়ে ফিরে এসেছেন কাশ্মীর থেকে। ততদিনে মঠের নতুন দ্বিতল বাড়ি নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। গুরুভাইদের ডেকে বললেন, এবারে নীলাম্বরবাবুর বাগানবাড়ি থেকে নূতন বাড়িতে মঠ স্থানান্তরিত করতে হবে। পূর্ণোদ্যমে শুরু হয়ে গেল ব্যবস্থাপনা।


১৮৯৮ সাল। এদিন ভোরে গঙ্গাস্নান সেরে স্বামীজী প্রবেশ করলেন ঠাকুরঘরে। অনন্তর পূজকের আসনে বসে পুষ্পপাত্রে যতগুলি ফুল-বেলপাতা ছিল, একত্রে দুহাতে তুলে প্রভুর শ্রীপাদপদ্মে অঞ্জলি প্রদান করলেন। তারপর একেবারে ধ‍্যানস্থ। এইভাবে বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হয়ে গেল। ঠাকুরঘরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে গুরুভ্রাতা, সন্ন‍্যাসীবৃন্দ ও অন‍্যান‍্য ভক্ত-শিষ‍্যরা স্বাক্ষী থাকলেন এই অপূর্ব দর্শনের। 


এবারে বাগানবাড়ি থেকে উত্তরাভিমুখে শুরু হল ছোট একটি শোভাযাত্রা। সামনে স্বামীজী স্বয়ং। ডান কাঁধে ধরে রেখেছেন ঠাকুরের পূতাস্থি পূর্ণ তাম্রপাত্রটি----'আত্মারামের কৌটা'। গঙ্গার তীরে ঘন ঘন শঙ্খধ্বনি ও ঠাকুরের নামে জয়ধ্বনিতে মনে হল পার্শবর্তী জাহ্নবীও যেন নৃত‍্যে মেতেছে। 


যেতে যেতে স্বামীজী শিষ‍্যকে বললেন,"ঠাকুর আমায় বলেছিলেন, 'তুই কাঁধে করে আমায় যেখানে নিয়ে যাবি, আমি সেখানেই যাব ও থাকব, তা গাছতলাই কি, আর কুটিরই কি!' সেজন‍্যেই আমি স্বয়ং তাঁকে কাঁধে করে নতুন মঠভূমিতে নিয়ে যাচ্ছি। নিশ্চই জানবি, বহুকাল পর্যন্ত 'বহুজনহিতায়' ঠাকুর ঐ স্থানে স্থির হয়ে থাকবেন।" 


নূতন দালানের ঠাকুরঘরে এসে স্বামীজী কাঁধ থেকে আত্মারামের কৌটাটিকে নামিয়ে নির্দিষ্ট আসনে স্থাপন করলেন। অতঃপর ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণামপূর্বক শুরু হল ঠাকুরের পূজা। পূজান্তে প্রজ্বলিত যজ্ঞাগ্নিতে হোম করলেন। পরে সন্ন‍্যাসীদের সহযোগিতায় পায়েসান্ন তৈরী করে ঠাকুরকে ভোগ নিবেদিত হল। সকলের উদ্দেশ‍্যে স্বামীজী বললেন,"আপনারা আজ কায়মনবাক‍্যে ঠাকুরের পাদপদ্মে প্রার্থনা করুন যেন মহাযুগাবতার ঠাকুর আজ থেকে বহুকাল 'বহুজনহিতায় বহুজনসুখায়' এই পুণ‍্যক্ষেত্রে অবস্থান করে একে সর্বধর্মের অপূর্ব সমন্বয়কেন্দ্র করে রাখেন।" সকলে করজোড়ে প্রার্থনা করতে লাগলেন।


স্বামীজী বিশ্বজয় করে ফেরার সময় শ্রীশ্রীঠাকুরের পোর্সিলিনের পট তৈরী করিয়ে এনেছিলেন। আর নিরঞ্জন মহারাজ তৈরী করিয়ে রেখেছিলেন একটি সিংহাসন। পোর্সিলিনের পটে সেই আসনে বসিয়ে ঠাকুরের পূজা হল। ১৯৩৮ সালে নূতন মন্দিরে ঠাকুরের মূর্তি প্রতিষ্ঠার পরে পট সহ আসনটি নিয়ে যাওয়া হয় গর্ভমন্দিরের দোতলায়, ঠাকুরের শয়নকক্ষে। 


বেলুড় মঠে স্বামীজীর ঘরের উত্তর পশ্চিমে দ্বিতল ভবনের সেই আদি মন্দিরটি একশত পঁচিশ বছরের স্মৃতিতে আজও পূর্ণমহিমায় সুবাসিত। ঠাকুরের আসনে শোভা পায় একটি তৈলচিত্র। অনেকেই বলেন 'পুরানো মন্দির'। তাতে কি! শ্রীশ্রীঠাকুর যে বলেছেন, তিনি এখানেই থাকবেন! শতকোটি প্রণাম নিও ঠাকুর।


জয় ঠাকুর জয় মা জয় স্বামীজী জয় গুরুদেব।


✍️ ©️ শুভেন্দু চক্রবর্তী।

#collected

Tuesday 5 December 2023

চিড়িয়াখানায় ভাবস্থ শ্রীরামকৃষ্ণ

 




*চিড়িয়াখানায় মা দুর্গার বাহন দেখে সমাধিস্থ হয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ* ।


তিনি ভগবানের দেখা পেয়েছিলেন। নিজ স্ত্রীর মধ্যে দেখেছিলেন ঈশ্বরীর রূপ। সেই রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব যখন আলিপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে সিংহ দর্শন করেছিলেন তখন তাঁর এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ১৫০ বছরের চিড়িয়াখানা ইতিহাসে সেই কাহিনি আজও ঘুরে বেড়ায়।


দেবী দুর্গার বাহন সিংহ। তাকে চাক্ষুষ দেখে তিনি মোহিত হয়ে পড়েছিলেন। খুব কম জনই জানেন সেই কথা। চিড়িয়াখানায় তাঁর আগমনের স্মৃতিফলক মনে করায় সেই ‘অমৃত’ কথা।


এশিয়ার অন্যতম বড় এই চিড়িয়াখানা কখনও বাঘ সিংহের ক্রসবিড, কখনও মার্মোসেট চুরি, শিবা নামক বাঘের নর ভক্ষণ সহ নানাবিধ ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। প্রাচীনতম গজ কচ্ছপও ঘুরে ফিরে বেড়াত৷ এসবই হালফিলের ঘটনা৷


কিন্তু ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের চিড়িয়াখানা দর্শনের কথা তো তেমন উঠে আসেনি৷ মহানগরের গর্বের স্থান দর্শন করে গিয়েছেন বহু বিখ্যাত মানুষ। তাঁদের অন্যতম রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব। নতুন করে সেজে ওঠা চিড়িয়াখানায় বসানো ফলকে ধরা আছে সেই কথা৷ সেখান থেকে জানা যায়, ঠাকুরের পদধূলি চিড়িয়াখানায় পড়েছিল ১৮৮৪ সালে। তখন চিড়িয়াখানার বয়স প্রায় ১০ বছর৷ ২৪ ফেব্রুয়ারির এক শীত শেষের সকালে তিনি এসে হাজির হয়েছিলেন আলিপুর চিড়িয়াখানায়।


কথামৃতে সেই দিনের কাহিনি বর্ণিত রয়েছে। সেখান থেকে জানা যায়, দক্ষিণেশ্বরে এসে তিনি শিবনাথ শাস্ত্রী মহাশয়কে শহরের নতুন আকর্ষণের স্থল চিড়িয়াখানা দর্শনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। ঠাকুরের কথা ফেলতে পারেননি শাস্ত্রী মহাশয়। এদিকে তাঁর একটি জরুরি কাজও ছিল। অনেক ভাবনাচিন্তার পর তিনি স্থির করেন পরমহংসদেবকে তাঁর গাড়ি করে কিছুটা পথ এগিয়ে দেবেন। এরপরের দায়িত্ব শিষ্য নরেনের৷

কথামৃতের উল্লেখ থেকে জানা যায়, ওইদিন সুকিয়া স্ট্রীট অবধি শ্রীরামকৃষ্ণকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শিবনাথ শাস্ত্রী। এরপরে তাঁকে ওই গাড়ি করেই আলিপুরের চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসেন নরেন।

এ তো গেল আসার গল্প৷ ভিতরে কী ঘটেছিল ? জানা যায় চিড়িয়াখানা ঢুকেই রামকৃষ্ণ দেবী দুর্গার বাহন সিংহকে চোখের সামনে দেখে মোহিত হয়েছিলেন। সোনালী কেশরের পশুরাজকে দেখে ‘সিংহ জগজ্জননীর দেবী দুর্গার বাহন’, এই কথা বারবার আওড়াতে থাকেন। এরপর দেখতে থাকেন শুধু সিংহটিকেই। সেদিন তিনি আর কোনও পশু দেখেন নি। দেবীর বাহনকে দেখেই তাঁর মন ভরে গিয়েছিল।

চিড়িয়াখানা দর্শনের কথা শুনিয়েছিলেন ঘনিষ্ঠদের। শ্রীম  রচিত কথামৃত থেকে জানা যায় তিনি বলেছিলেন, “চিড়িয়াখানা দেখতে লয়ে গিছলো। সিংহ দর্শন করেই আমি সমাধিস্থ হয়ে গেলাম। ঈশ্বরীর বাহনকে দেখে ঈশ্বরীর উদ্দীপন হল-তখন আর অন্য জানোয়ার কে দেখে। সিংহ দেখেই ফিরে এলাম।”বাকিটা ইতিহাস।


সূত্রঃ উদ্বোধন।

জয় ঠাকুর মা স্বামীজী মহারাজ 🙏🏻🌻🌺🏵️

Thursday 21 September 2023

Ramchandra Dutta


              ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব

 
শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র দত্ত( ঠাকুরের অন্যতম গৃহী ভক্ত, পেশায় তিনি একজন ডাক্তার ছিলেন।)



❇️গৃহী ভক্ত রামচন্দ্র দত্ত:-

--------------------

যৌবনকালে শিক্ষিত সমাজে অনেকেই ঈশ্বরে বিশ্বাস করেনা। জীবনে ধাক্কা খেয়ে খেয়ে তখন প্রশ্ন  জাগে। মনে হয়, কার জন্য এত কষ্ট পাই বার বার, এত ভোগান্তি কেন।

তখন হয়তো কারু জানতে ইচ্ছে করে জন্ম রহস্যের কথা। বেশিরভাগ লোকই সংসার-ঘূর্ণির্তে বদ্ধ হয়ে কলুর বলদের মতো ভাববার সময় পায়না, বা জানবার প্রবৃত্ত হয়না।

রামচন্দ্র দত্ত পড়াশোনার পর সরকারি কেমিস্ট হয়েছিলেন। রক্তামাশায়ের ওষুধ আবিষ্কার করেছিলেন। ছোটবেলা মাকে হারিয়ে বিমাতার সঙ্গে হাঙ্গামা হতে থাকায় আলাদা ঘর করেন।

অতৃপ্ত মনে ব্রাহ্ম সমাজে যেতে শুরু করেন। সেইকালে কেউ হয়তো খ্রিষ্ট ধর্মালম্বী হয়ে গেছেন, কেউ নাস্তিক। এখনও হচ্ছে।

রামবাবু অবশেষে ১৮৭৯ সালে দক্ষিণেশ্বর গিয়ে শ্রীরামকৃষ্ণের দর্শন লাভ করেন। ধীরে ধীরে দৃঢ় বিশ্বাস হয় যে পরমহংসদেব হলেন স্বয়ং ঈশ্বর। 

মনে নাস্তিকতার ভাব এসেছিল, তবে সংস্কার কোথা যাবে? মনে মনে শ্রীকৃষ্ণের ভক্ত ছিলেন। নিরামিষ আহার করতেন।

একদিন ঠাকুর বললেন, তোমায় স্বপ্নে যে মন্ত্র দিয়েছি, সেটি ফিরিয়ে দাও। রামবাবু প্রণাম করে ঠাকুরের চরণে সেই মন্ত্র ফুলের মত অর্পণ করেন। ঠাকুর বললেন দেখ, আর সঙ্গে সঙ্গে রামবাবু তাঁর ইষ্টদেবতা দর্শন করলেন।

করুণাময় ঠাকুর বললেন, তোমার আর কিছু করার দরকার নেই। যা দেখেছ তা স্মরণ করবে, আর এখানে আসার সময় হাতে করে সামান্য কিছু নিয়ে আসবে।

রামবাবু কলকাতার কাছে কাঁকুড়গাছিতে একটি তুলসী উদ্যান তৈরি করেন সাধনা করতে। ঠাকুরকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে তাঁর চরণ স্পর্শ করান স্থানটি পবিত্র করতে। 

পরে, পরমহংসদেবের মহাসমাধির পর, শ্মশান থেকে পবিত্র ভস্ম এনে রাখা হয়।

রামচন্দ্র দত্তের জীবনাবসান হলে, ইচ্ছা অনুযায়, তাঁর ভস্ম এনে রাখা হয় সেই উদ্যানেই।

ঠাকুর যে বলতেন, সংসারে থেকেও ঈশ্বর লাভ করা যায়, রামবাবু হলেন তার নজির, যেমন মাস্টার মহাশয় — আরও অনেকেই। মনেতে ত্যাগ থাকলেই হল। নির্লিপ্ত ভাবে সংসারে থাকা। 

সংসারে আসা কেবল কিছু কাজের জন্য, হয়ে গেলেই স্বধামে ফেরা যাবে, যেখানে আপনার লোক আছে। তাই তো মৃত্যুতে ভয় না, কষ্ট না,  পুনর্মিলনের আনন্দ।❇️


জয় ঠাকুর মা স্বামীজী🙏

Tuesday 25 July 2023


 


স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু!


স্বামীজী লিখেছেন, প্রত্যেক জীব শক্তি প্রকাশের এক – একটি কেন্দ্র। পূর্বের কর্মফলে সে শক্তি সঞ্চিত হয়ে আছে, আমরা তাই নিয়ে জন্মেছি।


প্রণম‍্য গবেষক শঙ্করীপ্রসাদ ‌বসু তাঁর সুভাষচন্দ্র বিষয়ক গবেষণাগ্রন্থে বলেছেন — তিনি সেই ক্ষণজন্মা পুরুষ, যিনি প্রথম জীবনে মোক্ষমার্গের অনুসারী পরে ‌তাকে ত‍্যাগ করে পরিণত যৌবন থেকে — ভারতীয় ইতিহাসে ধর্মমার্গী মহাবীর অর্জুনের ভূমিকা নিয়েছিলেন।

তাঁর কাছে ভারতের ধর্মক্ষেত্র – কুরুক্ষেত্রে কৃষ্ণের ভূমিকা নিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ।


স্বামীজীর ত্যাগের মন্ত্রে সুভাষের জীবন উদ্বেলিত হয়ে উঠেছিল যুবা বয়সেই।


কলেজে পড়তে পড়তেই মনে তোলপাড় আকুতি — আর নয়, এবার বেরিয়ে পড়তে হবে গুরুর সন্ধানে — তাঁর বয়স তখন ১৭ বছর। তখন একটা অভাবিত ঘটনা ঘটে তাঁর জীবনে।


দূর সম্পর্কের ‌এক ‌আত্মীয় যুবক এসেছিলেন কটকে। সুভাষ একদিন গেলেন তাঁর কাছে।

যুবকটি ছিলেন ‌স্বামী বিবেকানন্দের ভক্ত। তাঁর টেবিলে রাখা ছিল বিবেকানন্দের লেখা অনেকগুলি বই। সুভাষ বইগুলি ‌পড়তে ‌শুরু করলেন — এক নতুন দিগন্ত খুলে গেল ‌তাঁর সামনে।


ধর্মে ধর্মে কোনও ভেদ নেই;

দয়া নয় সেবা, ত‍্যাগ, ব্রহ্মচর্য।


দরিদ্র অবহেলিত মানুষের সেবাই যে পরম কর্তব‍্য, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ রইল না তাঁর।


সন্ন‍্যাসী হওয়ার বাসনা — প্রবল হয়ে উঠল তাঁর মনে। কিন্তু সন্ন্যাসী হতে গেলে প্রয়োজন একজন সদগুরুর।


তিনি শুনেছিলেন উত্তর-পশ্চিম ভারতে এমন সন্ন্যাসী আছেন, যাঁরা প্রকৃত পথের সন্ধান দিতে পারেন।


তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন, দু লাইনের লেখা একটি পোষ্টকার্ডে চিঠি দিয়ে।


উত্তর ভারতের সব কটি তীর্থ তিনি ঘুরলেন, সঙ্গে দু-জন বন্ধু ছিলেন। শুরু হল পরিব্রাজক সুভাষ চন্দ্রের হিমালয় যাত্রা। এ যেন স্বামী বিবেকানন্দের পদাঙ্ক অনুসরণ করেই পরিব্রাজক বেশে আর ‌একজন ভারত পথিকের তীর্থ যাত্রা।


লছমনঝোলা, হৃষিকেশ, হরিদ্বার, গয়া, মথুরা, বৃন্দাবন অনেক ‌তীর্থে ঘুরলেন। বৃন্দাবন হয়ে সুভাষচন্দ্রেরা এলেন বারাণসীতে।


সেখানে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের দুটি ‌শাখাকেন্দ্র পাশাপাশি অবস্থান করছে।


রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রথম সভাপতি ছিলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দ, যিনি শ্রীরামকৃষ্ণের প্রিয় রাখাল নামে পরিচিত, যাঁকে স্বামী বিবেকানন্দ ‘রাজা’ বলে ডাকতেন।


সুভাষচন্দ্র লিখেছেন, “বারানসীতে স্বামী ব্রহ্মানন্দ আমাদের সাদর অভ্যর্থনা জানালেন, তিনি আমার বাবা ও ‌পরিবারের অনেককেই চিনতেন। এখানে আমরা কয়েকদিন রইলাম।”


সেই সময়ে ‌‌একদিন নিজের মনোগত বাসনা প্রকাশ করে সুভাষ, স্বামী ব্রহ্মানন্দের কাছে সন্ন্যাস প্রার্থনা করেন।


সুভাষের প্রার্থনা শুনে  স্বামী ব্রহ্মানন্দ সেই তরুণের তেজোদৃপ্ত মুখের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে সম্ভবত অনাগত ভবিষ্যতের এক মহানায়কের আবির্ভাব লগ্নকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন।


এই ঘটনার অল্পদিন পরে, সুভাষচন্দ্রের দেশ সেবা তথা রাজনীতির প্রভাব দেখা যায়।


স্বামী ব্রহ্মানন্দের দর্শনে সুভাষচন্দ্র অপার শান্তি পেয়েছিলেন। তাঁর তৃষিত বুকে শান্তিবারিধারা নেমে এসেছিল।


বন্ধু দিলীপকুমার রায়ের দুহাত চেপে ধরে বললেন, “ঐ রাখাল মহারাজই আমাকে কাশী থেকে ফিরিয়ে পাঠান, বলেন, আমাকে দেশের কাজ করতে হবে।”


সন্ন্যাসজীবন নয়, অন্তরে বৈরাগী থেকে দেশের কাছে তাঁকে আত্মোৎসর্গ করতে হবে — এই ছিল সুভাষের প্রতি স্বামী ব্রহ্মানন্দের উপদেশ।


সুভাষচন্দ্রের অগ্রজ সুরেশচন্দ্র বসু স্বামী শঙ্করানন্দের মুখে শুনেছেন,

“একদিন বারাণসীর মিশন বাড়িতে স্বামী ব্রহ্মানন্দ যখন বসেছিলেন, তখন মহারাজ দেখতে পান একটি ছেলে এসে ঢুকলো। মহারাজ বললেন, জানকীবাবুর ছেলে মনে হচ্ছে। যদি তাই হয়, তবে ছেলেটির যেন যথাযথ দেখাশোনা করা হয়।


বিকেলবেলা মহারাজের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হলে — তিনি তাঁকে গৃহে ফিরে যাওয়ার উপদেশ দেন এবং বলেন, — তাঁকে তাঁদের মত সন্ন্যাস নিতে হবে না। দেশ তাঁর কাছে প্রভূত জিনিস প্রত্যাশা করছে।”


স্বামীজীর বাণী তাঁর অন্তরে অগ্নির স্ফুলিঙ্গের মত সঞ্চার করেছিল প্রেরণা আর উদ্দীপনা।


স্বামী ব্রহ্মানন্দের অধ্যাত্মশক্তির কৃপা মনকে দিল শক্তি, ধ্যানসজ্জাত স্থিরলক্ষে অবিচলতা আর বৈরাগ্যের আদর্শ।


রাজা মহারাজের (স্বামী ব্রহ্মানন্দ) যিনি বালক সুভাষচন্দ্রকে স্বদেশ সেবার পথনির্দেশ দিয়ে সন্ন্যাস গ্রহণ হতে বিরত করেন ও অমোঘ আশীর্বাদে জীবন ভূষিত ও ধন্য করেন। সেই মহাপুরুষের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সুভাষচন্দ্র পরবর্তীকালে ভাববিহ্বল হয়ে বলেন যে যিনি আশীর্বাদ পেয়েছেন, তিনিই জানেন তাঁর যথার্থ। স্বদেশের মুক্তিকল্পে তাঁর যে সুদীর্ঘ পথপরিক্রমণ, ব্রহ্মানন্দ আশীষই তাঁর ছিল সর্বোচ্চ দিঙনির্দেশক।


অন্তরে যেন অনুরণিত হল, “কে তুমি বাজালে নবীন রাগেতে ভারতের প্রাণবীণা।”


স্বামী বিবেকানন্দেরই এক গুরুভাইয়ের নির্দেশে, সন্ন‍্যাস গ্রহণের সঙ্কল্প ত‍্যাগ করে ঘরে ফিরে এলেন —– সুভাষচন্দ্র।


সুভাষচন্দ্রের আজীবন এই আধ্যাত্মিক পিপাসাই তাঁকে স্বদেশমুক্তির বিশেষ কর্মযজ্ঞে প্রণোদিত করে ও বিবেকানন্দ-ব্রহ্মানন্দ নির্দেশিত পথে স্বীয় লক্ষের উদ্দেশ্যে অগ্রসর হতে অনুপ্রাণিত করে।


এও এক অদ্ভুত যোগাযোগ! গতকাল ছিল ২৩শে জানুয়ারি... একজনের আবির্ভাব তিথি আর একজনের জন্মদিন। দুই মহামানবকে জানাই অন্তরের শ্রদ্ধা ও প্রণাম।🙏🙏🙏💐🏵🌸🌼


 

🕉 ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেব 🕉


একদিন নরেন্দ্রনাথ তাঁর গুরুভাইদের সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর থেকে কলকাতায় ফিরছেন৷ 

    কথা উঠল ঠাকুরের সম্বন্ধে কার কি ধারণা? কেউ বলছে—অপূর্ব জ্ঞান, কেউ বলছে—অসাধারণ ভক্তি৷ 

এরকম নানা জনের নানারকম মন্তব্য হচ্ছে৷ নরেন্দ্রনাথ চুপ করে আছেন ৷ তখন অনেকে তাঁকে বললে—তুমি কি বল?

 স্বামীজী উত্তরে বললেন — L-O-V-E personified—প্রেমের মূর্তবিগ্রহ। 

ঠাকুরকে তিনি এইভাবে দেখেছেন।

 ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর সম্বন্ধ ছিল অদ্ভুত৷ ঠাকুরের কাছে তিনি যে আত্মসমর্পণ করেছেন তা একদিনে নয়। ঠাকুরের সঙ্গে তিনি অনেক দ্বন্দ্ব করেছেন, বলেছেন— তাঁর সঙ্গে এমন লড়াই বোধহয় আর কেউ করেনি! 

পদে পদে তিনি ঠাকুরের কথার প্রতিবাদ করেছেন, তর্ক করেছেন,  আর বলেছেন—প্রতিবারই হারতে হয়েছে৷

 যে-ঠাকুর লেখাপড়া জানতেন না, শিষ্ট সমাজে চলার উপযুক্ত কি না সন্দেহ—তাঁর কাছে স্বামীজী বারবার পরাভূত৷ কেন? 

কারণ, ঠাকুরের যে অপূর্ব শক্তি, তার কাছে কে না পরাস্ত হয়!

কাশীপুরে মহাসমাধির আগে তিনি নরেন্দ্রনাথকে তাঁর সমস্ত আধ্যাত্মিক শক্তি সমর্পণ করলেন। স্বামীজী অনুভব করেছিলেন ঠাকুরেরাদেহ থেকে তড়িৎকম্পনের মতো সূক্ষ্ম তেজোরশ্মি তাঁর দেহমধ্যে প্রবেশ করছে৷

 তিনি বাহ্যজ্ঞান হারালেন৷ 

চেতনা লাভ করে তিনি দেখলেন ঠাকুরের চক্ষে অশ্রুবর্ষন হচ্ছে৷

 তাতে অতীব চমৎকৃত হয়ে এরূপ করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে ঠাকুর বললেন,— " আজ যথাসর্বস্ব তোকে দিয়ে ফকির হলুম৷ তুই এই শক্তিতে জগতের কাজ করবি ৷ কাজ শেষ হলে পরে ফিরে যাবি৷"

ঠাকুরের অশ্রুবর্ষন দুঃখে নয়— এ আনন্দাশ্রু৷ 

    তিনি এমন একজন উত্তরাধিকারীকে পেয়েছেন, যার ওপর তাঁর জগদুদ্ধারকার্যের যে আদর্শ, তাকে রূপায়িত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। 

এই শক্তিমান ব্যক্তিই তাঁর পতাকা বহন করে চারদিকে নিয়ে যাবেন, বিশ্বজয় করবেন ৷

স্বামীজী ধর্মজীবনকে নতুনভাবে আমাদের কাছে পরিবেশন করেছেন। 

তিনি ঠাকুরের কাছ থেকে তা পেয়েছেন৷

 স্বামীজী না বললে আমরা কেউ ঠাকুরকে বুঝতে পারতাম না যে, তিনি এই তত্ত্ব প্রকাশ করতে দেহধারণ করে এসেছেন৷ 

ঠাকুরকে আমরা সাধারণভাবে একজন খুব উঁচুদরের ভক্ত বা উঁচুদরের জ্ঞানী, বড়জোর একজন মহাপুরুষ ভাবতে পারতাম৷

 কিন্তু জগতে একটা পরিবর্তন এনে দিতে পারে, এমন বিপুল শক্তি যে তাঁর ভিতর দিয়ে প্রকাশিত হচ্ছে—একথা স্বামীজীর সাহায্য ছাড়া আমরা কখনো বুঝতে পারতাম না৷ 

            -স্বামী ভূতেশানন্দ


জয় ঠাকুর মা স্বামীজী

🙏🙏🌼🌻🙏🙏



মানসপুত্র নেতাজী

 🌿 মানসপুত্র নেতাজী 🍁 🌻১৯০২ সালের জানুয়ারীতে সুভাষচন্দ্রের পিতা তাঁকে কটকের মিশনারী স্কুলে ভর্তি করে দিলেন, পুত্রের প্রাথমিক বিদ্যা লাভে...